এই
ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য ।
Belladona – বেলেডোনা
প্রতিশব্দ: এট্রোফ বেলেডোনা, ডেডলি নাইট শেড, বেলেডোনা বেক্রিফেরা, সোলেনাম
মিউরিওসাম, টলক্রাউট।
উৎস: বেলেডোনা ইউরোপের এক প্রকারের ক্ষুদ্র গাছ।যেটা ডেইলি নাইট সেড্
নামে পরিচিতি।
এটি পুরুশাখা বিশিষ্ট একপ্রকার জাতীয় বহুবষজীবি মোটা বৃক্ষ যাহা
৩ হইতে ৫ ফুট লম্বা হয়। September মাসে ইহার ফল পাঁকে।
প্রাপ্তিস্থান: ইউরোপে এই সকল গাছ জম্মায়া থাকে। ভারতের হিমালয় অঞ্চলে ছয় হাজার
হইতে বার হাজার ফুট উঁচু স্থানে (সিমলা হইতে কাশ্মীর পর্যন্ত বিস্তৃত)ইহা প্রচুর পরিমাণে
জম্মে।
ক্রিয়াস্থান: স্নায়ুমন্ডলীর উপর ইহার
ক্রিয়া সর্বধিক। শরীরের ডান দিকের পীড়া, মস্তিস্কে ইহা ক্রিয়া করিয়া থাকে। মোট, স্থুলকায়,
পিত্তপ্রধান, সামান্য কারণে উত্তেজিত হওয়ার স্বভাব, পাতলা কেশ, সুন্দর চেহারা, নীলচক্ষু
এবং টিওবারকুলাস ধাতুবিশিষ্ট রোগীতে বেলেডোনা অধিক ক্রিয়া প্রকাশ করে।
নিদে©শক লক্ষণ:
১।উত্তাপ ও আরক্তিম ২।জ্বালা ও স্পশ©কাতরতা ৩।আকষ্মিকতা ও ভীষনতা ৪।হঠাৎ
আসে হঠাৎ যায়।
মনসিলক্ষণ:
১. কখন স্মৃতি প্রখর
আবার কখনো অমনোযোগী। কল্পনাতে ভূত-প্রেত, দানব.. কালো কুকুর, পোকা মাকড়, ভিতিকর মুখ
যা বীভস্য।
২. কখনো পালাতে/লুকাতে
চায়। জলে ডুবে মরতে চায়।
৩. কখনো বাঁচাল আবার
কখনো বোবার মত থাকে।
৪. বিছনায় হাতড়ায় মনে
করে কিছু হারিয়ে গেছে।
৫. উপবাস থাকিয়াও মনে
করে সে লাখপতি। হাবভাবে বুঝায় সে অনেক বড় লোক।
৬. কখনো স্ফুতি©যুক্ত আবার কখনো অন্যের মুখে থুথু
দেয় দাঁত কড়মড় করে আবার তকে কামড়ায় বা মরতে চায়।
৭. মনে উল্লাস জমিলে
ভিষণ ঝগড়া করে।
৮. দরুন প্রলাপ করে আবার
খুসির চোটে গগন ফাটিয়ে দেয়।
৯. নিজের মাথা মেঝেতে
আচড়ায় সব©দা বিরক্ত
ভাব, সবকিছুতে খ্যাত খ্যাত করে অনু্ভূতি প্রবল ভাবে মেঘাবৃত থাকে।
১০. বহু দূরের বস্তু দেখিতে
পারে অথাৎ ঘ্রাণ শক্তি অত্যন্ত প্রবল।
১১. কাল্পনিক নানা গন্ধ তার
নাকে আসে।
চরিত্রগত লক্ষন:
১. মুখ ও চক্ষু লালবর্ণ হয়,
মাথা ভারী হয়, ঘাড়ের দুই ধমনী দপদপ করে। মাথায় দপদপানি ব্যথা থাকে।
২. কোন কিছু গিলিবার সময় গলায়
ব্যথা অনুভূতি হয়। তরল কিছু গিলিবার সময় গলায় কষ্ট অনুভব হয়।
৩. ঠান্ডা বাতাস বা ঠান্ডায়
অসুখ হয়, মাথায় ঠান্ডা লাগিলে বা চুল ছাঁটার পর সদ্দি লাগে।
৪. আলোক অসহ্য। চক্ষু কনীকা
প্রসারিত হয়, চক্ষু যেন ঢুকিয়া যায়।
৫. পিঠে এবং কোমরে বেদনা, নড়াচড়ায়
কষ্টনুভব-মনে হয় যেন কোমর ও পিঠ ভাঙ্গিয়া যাইবে। তলপেটে ও কুঁচকীর উপর তীব্র বেদনা,
কাপড়ও রাখা যায় না এত বেদনা অনুভূত হয়।
৬. ইহার যে কোন পীড়া হঠাৎ ও
ভীষণভাবে আক্রমন করে এবং আক্রমণটি হঠাৎ চলিয়া যায়।
৭. মাথা নিচু করিলে বা নিচু
থেকে উঠাইলে মাথা ঘোরে, মাথা ঘুরাইতে থাকিলে অনেক সময় পিছনের দিকে বা বামদিকে পড়িয়া
যায়।
৮. গাল, গলা, গ্ল্যান্ড লাল,
উহাতে টাটানি বেদনা, হাত দিয়া স্পর্শ করা যায় না।
৯. স্ত্রীলোকদের শীঘ্র ঋতু
আরম্ভ হয়। স্রাবের অধিক হয়, সেই সাথে কাল চাপ রক্ত খুবই গরম। স্রাবের সহিত নিচের পেটে
বেদনাও থাকে।
১০. চোখের পাতা ভারীবোধ, চোখ
হইতে জল পড়ে।
১১. টকদ্রব্য খাওয়ার ইচ্ছা
হয়।
১২. রোগী স্থনের প্রদাহ।
দাঁত: সব লক্ষণ হঠাৎ আসে হঠাৎ যায়, তবে দাঁতের ব্যাথা
ধীরে ধীরে আসে ধীরে ধীরে যায়। খাবারের কিছুক্ষণ পর ব্যাথা শুরু হয় এবং তীব্র আকার ধারন
করে ।
মাথাব্যথা: মাথা বাম দিকে বা পিছন থেকে পতনশীল. পরিশ্রম
শ্বাস নিতে মাথায় ধড়পড় করে ও ব্যথা; চাপা সর্দিজনিত
প্রবাহ থেকে মাথা ব্যাথা. হঠাৎ outcries. ব্যথা খারাপ আলো, শব্দ, ঘড়া, বিকালে, বালিশ মধ্যে মাথার বিরক্তিকর; ডান দিকে মাথাব্যথা
শিশু লক্ষন: পাতলা
কেশ, সুন্দর চেহারা, নীল চক্ষু এবং টিউবরকুলার ব্যক্তিরাই সাধারণতঃ বেলেডোনার
ধাতুবিশেষ। ইহার রোগী চোখ মুখ লাল ও ফুলা, মাথা গরম, হাত পা ঠান্ডা, বালিশে মাথা
গোঁজে। শিশু হঠাৎ কোন পীড়ায় আক্রান্ত হয়। শিশুদের দন্তোদগমন কালীন জ্বরসহ আক্ষেপ ও
তড়কা জম্মে ।শিশুর প্রবল জ্বর, মুখ চোখ লাল বর্ণ, উত্তেজনা ও ঘর্ম, ঘুমাইতে চমকিয়া
উঠে, পেটে ব্যথা, অনবরত মাথাচালা, দাঁত কড়মড় করা, একবার ক্রন্দন পুনরায়
আচ্ছান্নতা, হস্তপদের শীতলতা, সাদা বর্নের বাহ্য প্রভূতি লক্ষণ দেখা যায়। শিশু
কিছুক্ষন পূর্বে সুস্থ ছিল, হঠাৎ তাহার পীড়া হইয়াই গুরুতর হইয়া পড়ে। শিশু কোন কারণ
ছাড়াই ক্রমাগত ক্রন্দন করিতে থাকে। অর্জীর্ণের সাথে পেটে কলিক বেদনা হঠাৎ আসে হঠাৎ
যায়। আমাশায় ও আমাশয়যুক্ত উদরাময় যখন শিশুর পেটে ব্যথা, গা বমি বমি, আচ্ছান্ন ভাব,
ছটফটানি, মুখ টানটনে প্রভৃতি লক্ষণ বর্তমান থাকে।
স্বপ্ন: পরিষ্কার স্বপ্ন দেখে কিন্তু মনে রাখতে পারেনা। স্বপ্নে খুন-খারপি,
চোর-ডাকাত, আগুন ও বিপদের ভয়।
পেট ব্যাথা
ব্যথা ধীরে ধীরে আসে হঠাৎ করে চলে যায়, সোজা হয়ে শুয়ে থাকলে ব্যাথা উপশম হয়, নড়াচড়ায় ব্যথা বৃদ্ধি হয়। সোজা হয়ে হাঁটিলে ব্যথা বৃদ্ধি কুঁজো হয়ে হাঁটলে ব্যথা উপশম।
ঋতুস্রাব
নিচের পাটে ও কোমরে ব্যথা ব্যাথা ছেড়ে ছেড়ে আসে, ঋতু স্রাবের রং লাল টকটকে, সোজা হয়ে হাঁটিতে পারে না সোজা হয়ে শুয়ে থাকলে ব্যথার উপশম হয়।
হ্রাস: সোজা হ্ইয়া দাঁড়াইলে, উষ্ন গৃহে, বিশ্রামে এবং অর্ধশায়িত অবস্থায়।
তুলনাঃ Aconite সঙ্গে Belladonna:
Aconite- এ রক্তাধিক্য, Belladonna অপেক্ষা অল্প।
Belladonna আবৃত অঙ্গে ঘর্ম থাকে, Aconite নাই।
Belladonna মৃত্যু ভয় থাকেনা, প্রলাপ থাকে।
Aconite-এ প্রলাপ থাকে না, মৃত্যু ভয় থাকে।
Belladonna-এ তন্দ্রা ও নিদ্রা হইতে চমকাইয়া উঠা
লক্ষণ
বেশী , Aconite-এ অস্থিরতা বেশী।
তুলনাঃ
Glonoinum সঙ্গে Belladonna:
মস্তকের দপ্ দপ্ কর বেদনা Belladonna
এর প্রধান লক্ষণ।
Glonoinum এই লক্ষণ আছে।
Belladonna- মস্তক পশ্চৎদিকে
বক্র করলে রোগী উপশম,
Glonoinum- এ বৃদ্ধি পায়।
Hyoscyamus ,Belladonna,
Stramonium: এ তিনটি প্রলাপের প্রধান ঔষধ
।
Belladonna: মস্তিষ্কে অধিক
রক্তসঞ্চয় থাকে, প্রলাপে অত্যন্ত প্রচন্ডতা থাকে।
Hyoscyamus: চোখ ও মুখে অরক্ততা
এবং ধমনীর দপদপানি থাকেনা। প্রলাপ অপেক্ষাকৃত মৃদু।
Stramonium: এরা শরীরের কাপড়
টানিয়া ফেলিয়া দেয়, শয্যবস্ত্র খুটিতে থাকে, কিংবা কিছু ধরার জন্য শূণ্যে হাত বাড়ায়।
হ্রাস: সোজা হ্ইয়া দাঁড়াইলে, উষ্ন গৃহে, বিশ্রামে এবং অর্ধশায়িত
অবস্থায়।
বৃদ্ধি: স্পর্শে, দেহ সঞ্চালনে, মস্তক
মুন্ডনে, রৌদ্রে, শয়নে, বায়ু প্রবাহে, শব্দে ও আলোকে, বেলা ৩ টায়।
ক্রিয়ানাশক: হিপার, ওপিয়াম, ব্রায়োনিয়া, কফিয়া, পালসেটিলা, মার্কসল।
পরবর্তী
ঔষধ: মার্কসল, ল্যাকেসিস, আর্সেনিক,
রাসটক্স, একোন।
অনুপূরক
ঔষধ: ক্যালকার্ব।
ক্রিয়াকাল: ১-৭ দিন।
ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক:- ফেনী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ।
যোগাযোগ:- ফরাজী হোমিও হল
সদর হসপাতাল মোড়, উত্তর বিরিঞ্চি রোড়-ফেনী।
মোবাইল:- ০১৮১৪-৩১৯০৩৩
1 মন্তব্যসমূহ
অনেক সুন্দর
উত্তরমুছুন