অধিক বুক ধড়ফড় করা - Atrial or Auricular Flatter, চতুর্থ বর্ষ - প্র্যাকটিস অব মেডিসিন

 অধিক বুক ধড়ফড় করা 
Atrial or Auricular Flatter








 
অরিকিউলার ফ্লাটারের সংজ্ঞা:- ইহাকে প্যাপিলেশন বা ধড়ফড় করা বলে। হৃদস্পন্দন অতি দ্রুত, অত্যধিক বর্ধিত হারে অস্বাভাবিকরূপে অরিকলের স্পন্দন হয়। হৃদপিণ্ডের এট্রিয়াম বা অরিকল যখন প্রতি মিনিটে ২৬০-৩২০ বার স্পন্দিত হয়, ডেন্ট্রিকল তাহার সমতাল রক্ষা করিতে পারে না, ফলে নাড়ী স্পন্দন ১৩০-১৬০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় । ভেন্ট্রিকল অরিকলের সাথে ২৪১ (অঃ২০০-ভেঃ১০০) তালে কুঞ্চিত হয়। ইহাকে এট্রিয়াল বা অরিকিউলার ফ্লাটার বলে ।

অরিকিউলার ফ্লাটারের কারণ:- কারণতত্ত্ব-যুবক বয়সে বাতজ্বরের ফলে হৃদপেশীর দুর্বলতা এবং সেই সাথে যদি মাইট্রাল স্টিনোসিস যুক্ত হয়, মধ্য বয়সের পর করোনারী ধমনীর কাঠিন্য, সিফিলিস, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি কারণে এই পীড়া হয়। ডিপথিরিয়া, নিউমোনিয়া প্রভৃতি রোগজনিতও এই পীড়া হয়। হৃদপিণ্ডের ব্যাধি ছাড়াও ইহা হইতে পারে।

অরিকিউলার ফ্লাটারের লক্ষণাবলী:-
১) অধিক বয়সীদের মধ্যেই এই পীড়া দেখা যায় ।
২) দ্রুত হার্টবিট, বক্ষমধ্যে পক্ষ সঞ্চালনের ন্যায় বিশৃঙ্খল আলোড়ন অনুভূত
হয়। ৩) মধ্যে মধ্যে ইহার আক্রমণ ঘটে এবং তাহার নিবৃত্তি ঘটে। পালপিটেশন
এবং হার্ট ফেল করার উপক্রম।
৪) বিরল ক্ষেত্রে কোলান্স লক্ষণ আসে।
৫) অতিরিক্ত পরিশ্রম বা স্নায়বিক উত্তেজনার ফলে অনেক সময় ভেন্ট্রিলের হার অরিকলের হারের ন্যায় বৃদ্ধি পাইয়া রোগী অজ্ঞান হইয়া পড়ে এবং মৃত্যু ঘটে।

  
অরিকিউলার ফ্লাটারের রোগ নির্ণয় বা ডায়াগনোসিস:- রোগ নির্ণয়- মধ্য বয়সে দুই সপ্তাহ বা তাহার অধিক কাল স্থায়ী, লিখ । পরিশ্রমে এবং বিশ্রামে অপরিবর্তিত এবং নিয়মিত নাড়ী স্পন্দনের উচ্চ হার মিনিটে ১৩০-১৬০ বার প্রভৃতি অরিকিউলার ফ্লাটার নির্দেশ করে ।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও পথ্য:- কোন পীড়ার আনুষঙ্গিক হিসাবে এই পীড়া দেখা দিলে মূল পীড়া প্রথমে আরোগ্য করিতে হইবে। অধিক পরিমাণে বিশ্রাম হিতকর। দৈহিক এবং মানসিক শ্রম ও উত্তেজনা পরিহার করিতে হইবে। শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য বর্জন করা উচিত। মাদকদ্রব্য পরিহার করা উচিত।
ব্যবহৃত ৫টি ঔষধের নির্দেশক লক্ষণ:-
১) ডিজিট্যালিস- বুকে সূঁচ ফোটানো ব্যথা অনুভব। বাম পার্শ্বে শুইলে হৃদকম্প, হৃদপিণ্ডের পীড়াজনিত রোগ, শ্বাসকষ্ট, নাড়ী ক্ষীণ, অনিয়মিত, ধীর ও সবিরাম। মনে হয় হৃদক্রিয়া বন্ধ হইয়া যাইবে।
২) অরাম মেট— বুক ধড়ফড়ানি, সর্বদা ভয় পায় ও আত্মহত্যার ইচ্ছা। হৃদপিণ্ডের বিবৃদ্ধি । 
৩) কফিয়া- আনন্দ, বিস্ময়, উত্তেজনাজনিত বুক ধড়ফড়ানি, জোরে জোরে হৃদস্পন্দন। নাড়ী দ্রুত ও কঠিন তৎসহ মূত্ররোধ। অনিদ্রায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কম্পন।
৪) নাক্স মস্কেটা- হিস্টিরিয়াগ্রস্তা স্ত্রীলোকদের পীড়া। হৃদপিণ্ড কম্পনশীল, দপদপ করে। মনে হয় হৃদপিণ্ড চাপিয়া ধরিয়াছে, বুক ধড়ফড়ানি। নাড়ীর গতি অবিরাম, বুক কাঁপে।
৫) ক্যানাবিস ইন্ডিকা- হিস্টিরিয়া, বিকার ভাব, ঘুম ভাঙিবার পর বুক ধড়ফড়ানি। শ্বাসকষ্ট, বুকে অত্যন্ত চাপবোধ। নাড়ী অত্যন্ত ধীর। 

অরিকিউলার ফ্লাটারের ভাবীফল:- ইহার ভাবীফল অশুভ অতিরিক্ত পরিশ্রম ও মানসিক উত্তেজনার ফলে রোগী অজ্ঞান হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইতে পারে।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ