Sepia – সিপিয়া
প্রতিশব্দ
:
সিপিয়া
ভেরা, সিপিয়া সাক্কাস, ইংফি জুইস অব দি কাটল ফিস।
উৎস
:
কাটলফিস
নামক একপ্রকার সামুদ্রিক মৎস হইতে প্রাপ্ত।
আবিষ্কার
:
ডাঃ
হ্যানিমান
ইহা আবিষ্কার করেন।
ক্রিয়াস্থান
:
সিপিয়ার
প্রকৃত পক্ষে একটি গভীর কার্যকরী ঔষধ। স্ত্রীজননেন্দ্রিয়ের উপরই ইহার প্রধান ক্রিয়া দেখা যায়। যকৃতেও ইহার ক্রিয়া করিয়া থাকে।
ধাতুগত
লক্ষণ :
ইহা
একটি এন্টিসোরিক ঔষধ। স্ত্রীলোকদের পীড়াতেই ইহা ব্যবহৃত হয়। যে কোন স্ত্রীলোকের উপর ও নীচ সমান অর্থাৎ পাছা মোটা কোমর সরু নয়, কপালে ও নাকে ঘোড়ার জিনের মত সাদা হলদে বা সাদা থাকে এবং শ্যামবর্ণ, সরল ও মুদু স্বভাব, কৃপণ ও অলস প্রকৃতির সুকমারী নারী দিগের পীড়ায় সিপিয়া উপকারি। পুরুষের ছেয়ে স্ত্রীদের বেলায় ভাল কাজ করে তাই ইহাকে স্ত্রীলোকদের ঔষধ বলা হয়।
মানসিক
লক্ষণ :
১.
উদাসীনতা, সে জন্য রোগীণী আপন জন যথা স্বামী, পুত্র, কন্যা যাহাদের প্রতি রোগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ভক্তি ও স্নেহপরায়ণ ছিল রোগী হওয়ার পর তাহাদের প্রতি কোন ভক্তি ও স্নেহপরায়ণতা থাকেনা।
২.
সামান্য কারণেই কাঁদিয়া ফেলে।
৩.
মেজাজ খিটখিটে, সহজেই রাগিয়া যায়।
৪.
একা থাকিতে ভয় পায়।
৫.
রোগ লক্ষণ প্রকাশ করিতে কাঁদিয়া ফেলে।
৬.
পূর্বে যাহাদিগকে ভালবাসিত, তাহাদের প্রতি তাচ্ছিল্য ভাব।
৭.
কাজ কর্মে অনিচ্ছা, স্মরণ শক্তির হ্রাস।
৮.
রোগী শারীরিক পরিশ্রমের কোন কাজ করিতে চায় না। মনে প্রফুল্লতা থাকেনা।
চরিত্রগত
লক্ষণ :
১.
পেটে প্রসব বেদনার ন্যায় বেদনা, রোগীণী মনে করে তাহার তলপেটের অভ্যন্তরস্থ সমস্ত যন্ত্রগুলি অর্থাৎ পেটের নাড়িভূড়ি সমস্তই যেন যোনি পথদিয়া বাহির হইয়া আসিবে। তাহার জন্য পায়ের উপর পা দিয়ে বা পা পেছিয়ে বসে।
২.
জরায়ু ও ডিম্বকোষদ্বয় অপরিপুষ্ট, অনেক সময় তাহার জরায়ুর স্থানচ্যুতিও লক্ষ্য করা যায়।
৩.
স্থন দুগ্ধের মাত্রাস্বল্পতা, স্তন দুগ্ধের অভাব হেতু ভূমিষ্ট সন্তানটি অনাহারে মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নেয়।
৪.
সঙ্গমেচ্ছার
অভাব, অথাপি যদি কোনও মতে তাহার স্বামীর সাথে যোন মিলনে মিলিত হয় তাহা হইলে প্রায়ই পুং বীর্যটি জরায়ু মধ্য হইতে বাহির হইয়া পড়ে।
৫.
সঙ্গমকালে
যোনিতে বেদনা-বেদনা ইউট্রাস হইতে নাভি পর্যন্ত পরিচালিত হয়।
৬.
স্ত্রীজনন্দ্রিয়ের
পীড়া জনিত আধ কপালে মাথা ধরা ও ব্যথা।
৭.
জরায়ুর কাঠিন্য বা বেদনা। যোনীর উপরিভাগে ফুস্কুড়ি, তাহাতে চুলকানি ও যোনী ফোলা।
৮.
নাসিকার উপর এক পার্শ্ব হইতে অপর পাশ্ব পর্যন্ত হরিদ্রা বর্ণের দাগ।
৯.
রক্ত প্রদর, ঋতুর সময়ে পায়ের হাড়ে কনকনানি।
১০.
প্রচুর দুর্গন্ধযুক্ত প্রদর, তাহার রং হলদে। যেস্থানে লাগে সে স্থানে চুলকায়।
১১.
পেট সর্বদাই খালি খালি বোধ।
১২.
কোষ্ঠ কাঠিন্য, মল অত্যন্ত শক্ত।
১৩.
দুগ্ধ অসহ্য। খাদ্যর কথা মনে হইলেই বমনোদ্রেক।
১৪.
শিশু শয়ন করিতেই প্রস্রাব করিয়া ফেলে্। প্রায় প্রথম ঘুমে বিছানায় প্রস্রাব করিয়া ফেলে।
প্রয়োগক্ষেত্র
:
যাবতীয়
স্ত্রীপীড়া, গর্ভস্রাব, প্রসব বেদনা, শ্বেত প্রদর, জরায়ুর পীড়া, প্রস্রাবের পীড়া, শিরঃপীড়া, চক্ষুপীড়া, কোষ্ঠবন্ধতা, অপরিপুষ্টিতা, বাত জ্বর, চর্মরোগ, প্রমেহ, অর্শ, অজীর্ণ।
বৃদ্ধি
:
দ্বিপ্রহরের
পূর্বে, সন্ধ্যাকালে, ধৌতকর্ম করিলে, যন্ত্রাদি ধৌত করিলে, আর্দ্রায়, বামদিকে, ঘর্মস্রাবের পর, অনেক্ষণ যাবত জলে ভিজিলে, প্রাতঃপালে, নিদ্রার প্রারম্ভে, বাম পার্শ্বে বা উপুড় হইয়া শুইলে, স্পর্শে, আহারের পরে।
হ্রাস
:
দ্রুত
সষ্ণালনে
ও কঠোর পরিশ্রমে, গ্রীষ্মকালে, শয্যার উত্তাপে, গরম প্রয়োগে, দক্ষিণ পাশ্বে শয়নে, ঠান্ডা বাতাসে, ঠান্ডা পানীয়, চাপে, নিদ্রার পর, নির্মল বায়ুতে।
অনুপূরক
ঔষধ :
নেট্রাম
কার্ব, নাক্সভুমিকা, স্যাবাডিলা, সালফার, নেট্রাম মিউর।
পরবর্তী
ঔষধ :
ক্যালকেরিয়া,
বেলেডোনা, কার্বোভেজ, ডালকামরা, লাইকোপোডিয়াম, নাক্সভম, পালসেটিলা, গ্রাফাইটিস, কোনিয়াম, রাসটক্স, সালফার।
ক্রিয়ানাশক
:
একোনাইট,
সালফার, ডিজিট্যালিস, এন্টিম টার্ট, এন্টিম ক্রুড।
সাবধানতা
:
ল্যাকেসিসের
পূর্বে, পরে ও পালসেটিলার সহিত, পর্যায়ক্রমে সিপিয়া ব্যবহৃত হয় না।
অতি
নিম্নশক্তি
বার বার এই ঔষধ প্রয়োগ করা অনুচিত।
ক্রিয়াস্থিতিকাল
:
৪০
হইতে ৫০ দিন।
ব্যবহার
শক্তি :
৬
হইতে ১০০০ শক্তি।
0 মন্তব্যসমূহ