ইউটিআই (মূত্রনালীর সংক্রমণ)

কিডনি ও মূত্রনালীর ইনফেকশনে প্রস্রাবে ও জ্বালা পোড়ায় হোমিও চিকিৎসা।





সূচনা:-
কিডনি মানবদেহের একটি অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ। যা মানবদেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিডনির ভেতরে নেফ্রন নামক প্রায় ১০লাখ ছাঁকনি থাকে। কোনো কারণে কিডনির স্বাভাবিক কাজের ব্যাঘাত ঘটলেই মানবদেহে শুরু হয় ছন্দপতন। কিডনির রোগের মধ্যে রয়েছে- জন্মগত ত্রুটি, হঠাৎ বা ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যাওয়া, পাথ্য এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ ইত্যাদি। কোনোভাবে কোনো জীবাণু যদি মূত্রতন্ত্রে প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করে তাহলে সেই অবস্থাকে বলা হয় মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ বা সংক্ষেপে ইউটিআই (Urinary tract Infection)। এটি একটি বিব্রতকর স্বাস্থ্য সমস্যা।

কিডনীর কাজ: 
মানবদেহের পিঠের নিচের অংশে মেরুদন্ডে দুই পাশে দু'টি কিডনির অবস্থান। মানবদেহে কিডনি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। দেহের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে এবং বাড়তি তরল পদার্থ নিঃসরণ করে।
▶ দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
▶ দেহের প্রয়োজনীয় লবণের সমতা ঠিক রাখে।
▶ দেহে এসিড ও ক্ষারের সমতা বজায় রাখে।
▶ এক ধরনের হরমোন তৈরির মাধ্যমে অস্থিমজ্জাকে প্রভাবিত করে শরীরে রক্ত তৈরি করে।
▶দেহের হাড়গুলোকে সরল ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে। 

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ: 
কিডনি, মূত্রথলি, মূত্রনালী এবং ইউরেটার- এ চারটি অংশ নিয়ে মূত্রতন্ত্র গঠিত। মূত্রতন্ত্রের যে কোনো অংশ জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়- তাকে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই বলে। ইউরেথাইটিস, সিস্টাইটিস, পায়েলোনেফ্রাইটিস প্রভৃতি প্রশ্রাবেরানিং ক্রমণের বিভিন্ন নাম ২ কলাই নামক জীবাণু শতকরা ৭০ শতাংশ প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণ। এ ছাড়া অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন প্রস্রাবের নালীতে নল থাকলে ইউটিআই হতে পারে।

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের প্রকার- 
অবস্থান অনুযায়ী মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ তিন প্রকারের হয়ে থাকে।
▶ উপসর্গবিহীন বা অ্যাসিম্পটোমেটিক সংক্রমণ।
▶ নিম্ন মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ। যা শুধু মূত্রথলি বা ব্লাডার এবং মূত্রনালী বা ইউরেথ্রা আক্রান্ত হয়।
▶ উপর মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ বা পাফোলানেফ্রাইটিস। যা কিডনি নিজেই আক্রান্ত হয়।

জীবাণু কিভাবে মূত্রতন্ত্রে প্রবেশ করে: 
মূত্রনালী থেকে প্রস্রাবের থলি, সেখান থেকে ইউরেটরের মাধ্যমে জীবাণু কিডনি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ই.কলাই জীবাণুর শতকরা ৯৫ শতাংশ খাদ্যনালী বা বৃহদন্ত্রে বসবাস করে। মলত্যাগের সময় যদি কোনোভাবে এ জীবাণু প্রস্রাবের নালীর সংস্পর্শে আসে, তখন এ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি আক্রান্ত হয়।

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের কারণ:
▶ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া (প্রায় ৯০ ভাগ) এবং কিছু ক্ষেত্রে যা ছত্রাক বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়।
▶ অ্যালার্জিজনিত কারণেও হতে পারে।
▶ মূত্রতন্ত্রে সংক্রমণ মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। কারণ মেয়েদের মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য ছোট। যেখানে ছেলেদের দৈর্ঘ্য ৮ ইঞ্চি, সেখানে মেয়েদের দৈর্ঘ্য মাত্র ১.৫ ইঞ্চি।
▶ মেয়েদের মূত্রদ্বার এবং যোনিপথ খুব কাছাকাছি, ঋতুস্রাবের সময় অনেকে নোংরা কাপড় ব্যবহার করে, ফলে সহজেই জীবাণু যোনিপথে এবং পরে মূত্রনালীকে সংক্রমিত করে।
▶ মেয়েদের প্রস্রাব আটকে রাখার প্রবণতা বেশি। ফলে সহজেই সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
▶ যারা পানি কম পান করে।
▶ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী।
▶ ষাটোর্ধ্ব বয়স, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণ: 
ইউটিআইর বেশ কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। তবে সংক্রমণের উপসর্গ আক্রমণের স্থানভেদ ভিন্নতর। 
যেমন:
▶ প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও ঘনঘন প্রস্রাব।
▶ প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হওয়া।
▶ প্রস্রাবের বেগ বেশি অথচ কম প্রস্রাব ত্যাগ।
▶ প্রস্রাবের পরও প্রস্রাব করার ইচ্ছা।
▶ তলপেটে ব্যথা এবং ভার ভার বোধ।
▶ ঘন ফেনার মতো দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব ত্যাগ।
▶ প্রস্রাবের রং ঝাঁপসা বা লালচে।
▶ ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব ত্যাগ, অনেক সময় রক্ত যাওয়া।
▶ দুর্বলতা, খাবারে অরুচিভাব।
▶ বারবার জ্বর হওয়া।
▶ শিশু বিছানায় প্রস্রাব ত্যাগ এবং যথাযথ না বেড়ে ওঠা।
▶ পেটের রোগ (যেমন: অজীর্ণ, ডায়রিয়া ইত্যাদি)

জটিলতা: ইউটিআইর বিরক্তিকর দিক হলো পুনরাগমন বা বারবার সংক্রমণ। ইউটিআই আক্রান্ত হয়- মহিলা একবার আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতিবার পাওয়ার পরবারবার হতে পারে। যখন বারবার একই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন পুনরাগমন রিকারেন্সকে রিলান্স বলে।
▶ সংক্রমণ রক্তে প্রবেশ চার সেপসিস এবং ক্ষেত্রবিশেষে জীবণসংহারী সেপটিসিমিয়া হতে পারে। এ অবস্থা অত্যন্ত মারাত্মক। যা সঠিক চিকিৎসা না করালে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ কারণ: মহিলাদের ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের সময় জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া মূত্রথলিতে চলে যায়। ফলে যৌন সম্পর্কে মূত্রথলির সংক্রমণ একটা বড় কারণ। 
▶ যে সবনারী বিভিন্ন স্পামিসাইড, কৃত্রিম ডায়াফ্রাম ব্যবহার করেন, তাদের ঝুঁকি আরো বেশি।
▶গর্ভধারণকালে ইউরেটর মোটা হয়, ফলে আবার গর্ভাবস্থায় ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন প্রস্রাব দিয়ে বেশি নির্গত হবে, ফলে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সংক্রমণ হয়। 
▶ ঋতুকালে যারা অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন তাদের সংক্রমণ হার বেশি।
▶ ঋতুবন্ধ হওয়ার পরও মেয়েদের মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ হওয়ার হারও বেশি। 

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা:
রোগ নির্ণয়ের জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে।
▶ প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা, প্রস্রাবের কালচার। (Urine test.R/EM/E)
▶ রক্তের সেরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা। (Serum Creatinine)
▶ তলপেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা। (Lower Abdomen Or L/A USG)
▶ মূত্রনালীর রস পরীক্ষা।
▶ সিস্টোস্কপি।

ধাতুগত লক্ষণে হোমিও চিকিৎসা:-

ইউটিআই আসলে খুব সাধারণ রোগ। সময়মতো যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে মারাত্মক আকার ধারণ করয়ে পারে। চিকিৎসকেরা উপযুক্ত রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে এ রোগ থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয় সম্ভব, ইনশা-আল্লাহ। 

ইটভা উর্সি - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবে জ্বালা, রক্ত, পুঁজ, হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ, ঘনঘন প্রস্রাবে বেগে পাথর কিংবা কিছু আটকিয়ে আছে, দড়িরমত রক্তের চাপ নির্গত হয়, মাঝে মাঝে সবুজ প্রস্রাব হয়। 

প্যারিরা ব্রাভা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রথলি স্ফিীতি ও প্রস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধি পীড়ায় মূত্রথলি সর্দিস্রাবসহ প্রচণ্ড বেদনা মূত্রকালো, শ্লেষ্মাময়, রক্তাক্ত মূত্রবেগে কুছণ, penis বা লিঙ্গমুন্ড এর মাঝখানে জ্বালা করে, রাতে বৃদ্ধি, রোগাঁ দুই পা ফাঁক করে সামনের দিকে ঝুঁকে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে প্রস্রাব করে। 

এসিড পিত্রিক - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবে লিঙ্গের অগ্রভাগে জ্বালা যন্ত্রণা, প্রস্রাবের শেষে প্রস্রাব গড়িয়ে ও ফোঁটা ফোঁটা পড়ে- কোপাইন। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর কিডনী প্রদাহে ফসপেট, ইউরিক এসিড, এলবুমেন থাকে। 

ক্যানাবিস স্যাট - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর বারবার কষ্টদায়ক মূত্রত্যাগ, খোঁচামারা ব্যথা, মূত্রত্যাগে জ্বালাপোড়া, মূত্ররেধ কোষ্টকাঠিন্য, শ্লেষ্মা ও পুঁজেমূত্রপথ অবরূদ্ধ কিডনী স্ফীতি থাকে। 

সার্সাপেরিলা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাব স্বল্প, পিচ্ছিল, বালুকাময়, রক্তযুক্তমূত্র, মূত্রপাথরী, মূত্রত্যাগে তীব্র বেদনা, উপবেশনকালে ফোঁটা ফোঁট মূত্র নিঃসরণ, স্ফীতি, টাটানি বেদনা দক্ষিণ দিকের মূত্রগ্রন্থি হতে নিম্নগামী বেদনা, কুহুন, ক্ষীণ, লিঙ্গমুন্ডে বেদনায় বসে প্রস্রাব করা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে। 

বাব্বেরিস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রগ্রন্থি হতে বেদন বিস্তৃত হয়ে নিম্নের দিকে কোমরে, সেখান থেকে বাম উরুদ্বয় হয়ে পায়ের ডিম পর্যন্ত নামে, বাম কিডনি হতে মূর নালির মধ্যে বেদনা বিস্তৃত হয়, বেদনা ঝাঁকি লাগলে, সঞ্চালনে, বসে থাকলে, অবনত হলে, মূত্রত্যাগে বৃদ্ধি পায় কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকলে বেদনার উপশম হয়। 

ক্যান্থারিস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালির পাথর প্রদাহে সর্বদাই প্রস্রাব করার চেষ্টায় পুনঃপুন প্রস্রাব বেগ, কুহুন, আগুনেরমত জ্বালাপোড়া, রক্ত প্রস্রাব, কামোন্যাদভাব শীতকাতর, গোসলে বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য, দাঁড়ালেও পদচারণা করলে প্রস্রাবের বেগ হয়, কিন্তু বসলে উপশময়ের করে। 

ওসিমাম ক্যান - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবের পূর্বে ও পরে জ্বালা এবং বসে প্রস্রাব করে- পরিস্কার হয় না, দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলে পরিস্কার হয় কিন্তু মূত্রপাথরীর কারণে বমি হয়। 

টেরিবিবিস্থা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবযন্ত্র কষ্টকর, রক্তময় প্রস্রাব, স্বল্পমূত্র, কুস্থণ, জ্বালাযন্ত্রণা হয়।

ক্যানাবিস ইন্ডিকা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমন রোগীর বারবার কষ্টদায়ক মূত্রত্যাগ, খোঁচামারা ব্যথা, মূত্রত্যাগে জ্বালাপোড়া, মূত্ররোধ, কোষ্টকাঠিন্য, শ্লেগার খুঁজে মূত্রপথ অবরূদ্ধ কিডনী ক্ষীতি থাকে। 

ক্লিমেটিস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ডান দিকের অন্তকের। বড় ও বেদনা, রাতে প্রস্রাবের যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়, শীতকাতর, প্রস্রাব ক্ষীণধারায়, ফোঁটা ফোঁটা ও ঝাঁকি দিয়ে নির্গত যাকুম স্থলে অনুপাতে প্রস্রাব হয় না, পিপাসাহীনত থাকে। 

ক্যালকেরিয়া কার্ব - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর গন্ডমালা ধাতুগ্রস্থদের মূত্রপাথরী, বারবার প্রস্রাব, মূত্র যন্ত্রের বেদনা সাদা তলানি পড়ে। 

থুজা, কোনিয়াম, ব্যারাইটাকার্ব, নাক্সভূমিকা, নাক্সমস্কেটা, লিয়াট্রিসস্পাই, পাথরকুচি - সংক্রমণ রোগীর মূত্রথলির মখশায়ী গ্রন্থির উৎপাটন করে ফেলার কারণে প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণায় প্রস্রাব করতে পারে না। 

থুজা - মূত্রতাতা অল্প গরম পানি সেবন করতে চায়- আর্সেনিক এলব। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর পর্বেই গনোরিয়াও সিফিলিয় রোগের আক্রান্তের ইতিহাস থাকা সত্তেও হাতের আঙ্গুল দ্বারা পায়খানা বের করে। 
 
ওপিয়াম - মুত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ভয়পেয়ে মূত্ররোধ, অসাড়ে মূত্রস্রাব, মূত্রাশয়ের শক্তি ও অনুভূতি লোপ হয়। 

ক্রোটেলাস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ডান কিডনীতে কোমলা লেবুর মত ফোলায়, টাটানি ব্যথা, জ্বর, কালচে বা কালো রক্ত প্রস্রাব করে। 

পালসেটিলা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালিতে বারবার ক্যাথাটার পড়ানোর কারণে লিঙ্গ ও অভদ্বয় স্কুলে যন্ত্রণায় প্রচণ্ড জ্বরে প্রস্রাব হয় না- ক্যানাবিস স্যাট, থুজা, ক্যান্থারিস, টেরিবিবিস্থা। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণায় অভদু'টি ফোলে প্রচণ্ড ব্যথা করে। 

মার্কডল - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর দেহের চর্ম থলথলে, তাম্রবর্ণ উদ্ভেদ, দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস, লালাস্রাব, জিহবা কালোবর্ণ রোগীর প্রষ্টেট গ্রন্থির প্রদাহ ও স্ফীতি এবং প্রসাব বন্ধের ন্যায় হয়। 

থুজা, কোনিয়াম, ব্যারাইটা কার্ব - ক্যান্সারের রোগীর মূত্রথলির মুখশায়ী গ্রন্থির উৎপাটন করে ফেলার কারণে প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণায় প্রস্রাব করতে পারে না- বা প্রস্রাব বন্ধ হয়। 

 ক্যাক্টাস - রোগীর জ্বর রাত ১১টায় আসলে দিন ১১টায় ছাড়ে আবার দিন ১১টায় জ্বর আসলে রাত ১১টায় জ্বর ছাড়ে, বাম হাত অসাড়, জিহ্বারতালু শুদ্ধতার জন্য পানি ছাড়া কোন কিছু খেতে পারে না, বাম পাশে শয়ন করতে পারে না, ঋতুস্রাব কালো শীঘ্র শীঘ্র হয়, ঋতুস্রাব শয়ন করলে বন্ধ হয়, কিন্তু বসলে ও নড়াচড়া করলে পুনরায় শুরু হয়, বাম বুকভার ও খাঁচা দিয়ে চেপে ধরেছে বা জোরে হাঁটলে হাতের মুঠাদিয়ে চেপে ধরছে অথবা ছাড়ছে, হৃৎপিন্ডে ধড়ফড় ও বুকে দপদপানি ব্যথাসহ অঙ্গপ্রতঙ্গে শোথ/ ফোলা, শ্বাসকষ্টের জন্য শয়ন করতে পারে না, ফুসফুস, নাসিকা, দাঁত, মলদ্বার, পাকস্থলী, লিভার, কিডনী, জরায়ু ও মূত্রনালী হতে চাপ চাপ রক্ত বা ছোট ছোট রক্তের গুটি বা ডলা প্রস্রাবের সাথে বের হয়। 

টেরিবিবিস্থা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবযন্ত্র কষ্টকর, রক্তময় প্রস্রাব, স্বল্পমূত্র, কুছণ, জ্বালাযন্ত্রণা হয়। 

স্পঞ্জিয়া - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর বাম অন্ডকোষে টাটানি বেদনা, শক্ত, অন্ডকোষের গোড়ার রগ ফোলে মোটা, নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে, প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। 

ব্রোমিয়াম - আর অন্ডকোষ ফোলে গরম ও শক্ত হয়, বেদনায় নড়তে চড়তে পারে না। 

এবসিন্থিয়াম/ এসিড বেঞ্জিক - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর প্রস্রাবে এলবুমেন, রং কমলালেবুরমত, ঝাঁজালো গন্ধ থাকে। 

সালফার - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য, নোংরা আর্বজনা ও মাটি মুখে দেয় কিন্তু ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে চায় না বা কান্না করে। 

ওপিয়াম - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ভয়ংকার ভয়ে কারণে প্রস্রাবে ফসপেট, ইউরিক এসিড, এলবুমেন এর কারণে চক্ষু, মুখমন্ডল, হাত, পা পানিতে ফুলে থাকা সত্ত্বেও যদি রোগী ঘুমানোর সময় চক্ষু সামান্য খালি করে এবং মুখ খালি করে নাক ডাকায় ন্যায় ঘুমায়। 

এলুমিনা - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ২/৩/৫ এর অধিক দিন ধরে পায়খানা না এবং প্রস্রাব ফোঁটা ফোঁটায় শোথ হয়। 

স্যাঙ্গুনেরিয়া ক্যান/ লিডাম/ হাইপেরিকাম/ আর্নিকা/ আর্টিমিশিয়া - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর আঘাতবশত অন্ডকোষ ফোলা ও শক্ত, বেদনাস্ফীতি, ইটের গুড়ায়মত তলানি প্রস্রাব বন্ধ হয়- আর্নিকা। কোন রকম দুর্ঘটনায় কিডনীর নারী বা রগ চিন্নিত বা টান লাগার কারণে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ হয়। 

ইগ্নেসিয়া - মারাত্মক মানসিক টেনশনের কারণে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর হয়। 

চায়না - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর রক্তহীনতায় জ্বর, দুর্বলতা, পেট ও পা ফোলা হয়। 

এপিস মেল - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর রক্তহীনতায়, দুর্বলতায় সর্বশরীরে লাল লাল চর্ম উদ্ভেদ, মুখমন্ডল ও হাত পা ফুলে যায়- থাইরয়েডিনাম। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর পিপাসাহীনতা, বসে থাকলে ঘুমঘুমভাব অথচ শু'লে ঘুমায় না, চোখের নিচে ফোলা, প্রস্রাব লালচে, জ্বালা সামান্য সামান্য হয়। 

কেলিকার্ব - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর চোখের উপর পাতায় ফোলা, প্রস্রাব লালচে, তলাপেটে শোথ হয়। 

আর্সেনিকএলব - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর সমস্ত দেহে শোথ, চামড়া ফ্যাকাশে, দুর্বলতা, ব্যাপক অস্থিরতা, খুব পিপাসা কিন্তু সামান্য পানি বারবার পান করতে চায়। 

লাইকোপোডিয়াম - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর ঠাণ্ডাপ্রবণতা, পেটে বায়ু সঞ্চায়, শ্বাসকষ্ট, চোখের উপরের পাতা ফোলা থাকে- কেলিকার্ব। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর সঞ্চয়ী মন, গরমখাবার ও মিষ্টিপ্রিয়, ব্যাপক ক্ষুধায় সামান্য খেলে আর খেতে পারে না, এরূপ রোগীর মূত্রনালির ক্যান্সার হয়। 

এসিড ফ্লোর - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর পেট ফোলায় হেউ হেউ করে ঢেঁকুরউঠে ও বায়ু নিঃসরণ, ঠাণ্ডা পানি পানের ইচ্ছা হয়। 

এসিড নাইট্রিক আর শক্ত প্রকৃতির হয়- অরাম মিউর নেট্রোনেটাম - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর আঘাতের পর ফেঁটে যাওয়া, ছিড়ে যাওয়া, কেটে যাওয়া ও হয়া পাষ্টারেডি পর অথবা ওপারেশনের পর থেকে আক্রান্ত স্থান থেকে রক্তস্রাব হয়েছিল বা রক্তস্রাব হচ্ছে অথবা আক্রান্ত স্থানে ক্ষতযুক্ত হয়ে উঠেছে আর এই ক্ষত হতে পুঁজ বের হচ্ছে, আক্রান্ত স্থানে ঠাণ্ডায় বৃদ্ধি এবং তাপে উপশম, এরূপ লক্ষণে ক্যালেন্ডুলা মন্ত্রের ন্যায় আরোগ্য। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালীর ছোট সুপারির মত নরম টিউমার হয়। 

ক্যালকেরিয়া ফস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালির মধ্যে নরম চাকা বা টিউমার থাকে। 

কোনিয়াম, বেলিস পিরেনিস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর আঘাতে কারণে মূত্রনালির টিউমার হয়। 

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ কারণে প্রস্রাবে ব্যাপক জ্বালা পোড়া হয়- ল্যাপিস এলব, ক্যালকেরিয়া সালফ, কেলি মিউর, ক্যালকেরিয়া ফস, নেট্রাম মিউর, 6x, 12x প্রতিটি হতে ১/৩টি করে বড়ি একত্রে মিশ্রিত করে সামান্য গরম পানিতে ভাত খাওয়ার পর সেব্য, হোমিও ওষুধের শেষ মেয়াদ কাল পর্যন্ত সেবন চলবে মা পথ্য ও ব্যবস্থা। কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন, গরুর মাংস ও অতিরিক্ত টক, ঝাল, গুরুপাক আহার ও এলার্জি খাবার খাওয়া নিষেধ। সর্বদা প্রফুল্ল মন ও বিশ্রাম রাখবে। অতিরিক্ত পরিশ্রম ও ভারী কাজ কখনও করা উচিত নয়।

ল্যাপিস এলব, ক্যালকেরিয়া হাইপোস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ কারণে প্রস্রাবে ব্যাপক জ্বালা পোড়া হয়। 

সিমিসিফিউগা, ক্যালকেরিয়া আয়োড, ল্যাঙ্কা ম্যাজ, কার্ব্বো এনি, মার্ক আয়োড - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালিতে ছোট চাকা চাকা বা টিউমারের রোগী বিছানায় শু'য়ে থাকলে জ্বালা যন্ত্রণা কম হয়। 

অরাম মিউর - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর অনাবরত হাত দ্বারা মাথা নাড়ে, অঙ্গকাঁপা ও রোগীর মূত্রনালিতে ফোলা ও বেদনা থাকে। 

এক্টিরিয়াস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর জরায়ু ভিতরে ঢুকে যায়, ব্যথা যন্ত্রণায় পাকিয়ে ঘা হয়ে পুঁজ নির্গত হয়। 

লিয়াট্রিস স্পাই - রোগীরসর্বাঙ্গীণ শোথে প্রস্রাবের পরিমাণে কম হয়- লিয়াট্রিস স্পাই থেকে ১৫/২০ ফোটা সামান্য জলে সেবনে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি করে শোথ রোগ আরোগ্য হয়। 

কেলি ক্লোরিকাম - মুখের ভিতরে প্রচুর লালা জমে, দাঁতে গোড়ায় নরম হতে সহজে রক্তপাত, চুলকানি গরমে বৃদ্ধি, চেয়ারে বসে থাকলে পা ফুলে যায়, প্রস্রাবে নেফ্রাইটস ও এলবুমেন থাকায় শোথ হয়। 

কলিনসোনিয়া - রোগীর মুখ হতে ভীষণ দুর্গন্ধ বের হতে থাকে, কিডনীর পঁচনযুক্তপূজমিশ্রিত রক্তপ্রস্রাব ও শোষ রোগ নিরাময়ের জন্য এসিড কার্বলিক। এ রোগে হৃৎপিন্ডের ব্যথা যখন কমে তখন অর্শ অথবা ঋতুস্রাব দেখা দেয়। হৃৎপিন্ডের ব্যথা ও অর্শ পৰ্য্যায়ক্রমে শুরু হয়, বাম বক্ষে ভারবোধ, অবসন্নতা ও শ্বাসকষ্ট। হৎপিন্ডের সমস্যা জনিত কারণে দেহে শোথাবস্থা হয়। 

ইহা ব্যতীত - অরামমেট, ক্লিমেটিস, ইরেক্টা, মার্ককর, মার্কসল, রডোডেনড্রন, ফেরাম ফস, কেলিমিউর, সাইলিসিয়া, ওসিমাম, লিথিয়াম কার্ব, প্যারাইরা ব্রাভা, ম্যাগ্নেসিয়া ফস, কেলি সালফ, নেট্রাম সালফ, সেলিনিয়াম, চিমাফিলা, এসিডবেঞ্জিক, ইকুইজেটাম, ইউভাউর্সি, কষ্টিকাম, এসিডনাইট্রিক, হায়োসিয়ামাস, ষ্ট্যাফিসেগ্রিয়া, ক্রিয়োজোট, জেরোফাইম, প্লামবামমেট, সিকেলিকর, বেলিস পিরেনিস, অষ্টিলেগো, থ্যালাস্পিবার্সা, মিলিফোলিয়াম, এমন কার্ব্ব, ফসফরাস, ইরিজিরন প্রভৃতি। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রনালি অপারেশনের পরে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি, চিৎ হয়ে শু'লে শ্বাসকষ্ট কম হয়- এসেটিক এসিড। তাৎক্ষণিক রোগের আরোগ্যের জন্য পঞ্চাশসহস্রতমিক ওষুধ M/1, M/2, M/3 অথবা 3x, 6, 30, 200 উত্তম। আর তিন মাসের অধিক রোগের ক্ষেত্রে 1M, 10M, 50M, CM অনুরূপ প্রয়োগে দ্রুত নিরাময় হয়।

বাইওকেমিক চিকিৎসা

ফেরাম ফস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মুত্রধারণের অক্ষমতা ও মূত্র পথের প্রদাহের বেদনা গরমে উপশম হয়। 

ম্যাগ্লেসিয়া ফস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর পেশীর সঙ্কোচনে মূত্ররোধ, আক্ষেপিক বেদনা ও জ্বালা থাকে। 

ক্যালকেরিয়া ফস - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর রক্তহীনতা, দুর্বলতায় কাতর বৃদ্ধ রোগীর মূত্রনালির ক্যান্সারে মূত্ররোধ হয়- ক্যালকেরিয়া ফস আর হাইপ্রেসার রোগীর দুর্গন্ধযুক্তপ্রস্রাব জ্বালা হলে কেলি ফস। 

ক্যালকেরিয়া ফ্লোর - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্র পথে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাংস বৃদ্ধি হয়। 

কেলি মিউর - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রাশয়ের স্ফীতির জন্য উৎকৃষ্ট রোগীর জিহ্বায় সাদা কালো প্রলেপ, মূত্র পথের প্রদাহের ব্যথা সঞ্চালনে বৃদ্ধি কিন্তু নড়াচড়ায় উপশম হয়। 

ক্যালকেরিয়া সালফ - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর মূত্রধারে ঘা বা পুঁজ হয়- সাইলিসিয়া বিফলে ক্যালকেরিয়া সালফ। 

নেট্রাম সালফ - মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর শয্যামূত্র, মুখে তিক্ত স্বাদ, পিত্তবমন, কম্পজ়র হয়। 

নেট্রাম ফস - জ্বর ঠুটো/ ঠুসা/ কোটা রোগীর মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ মূত্ররোধে ব্যথা, জ্বালা গরমে বৃদ্ধি কিন্তু ঠাণ্ডায় উপশম হয়- নেট্রাম মিউর। পেটে কৃমি ও অম্লরোগীর মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ হয়- নেট্রাম ফস, 6x, 12x শক্তি হতে ৩/৫বড়ি একমাত্রা তিনবেলা ভাত খাওয়ার পরে সামান্য গরম সেব্য।

অথবা মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর লক্ষণ সদৃশ্যে হোমিও ওষুধের উচ্চ শক্তি দু'দিন সেবনের পর তৃতীয় দিন থেকে সদৃশ্য (ডাঃ চ্যাপম্যান ও ডাঃ ওয়াকার উভয়ের বাইকেমিক ওষুধের মিশ্রণ পদ্ধতি) সাইলিসিয়া, নেট্রাম সালফ, কেলি মিউর, ক্যালকেরিয়া ফস, নেট্রাম মিউর, 6x, 12x প্রতিটি হতে ১/৩টি করে বড়ি একত্রে মিশ্রিত করে সামান্য গরম পানিতে ভাত খাওয়ার পর সেব্য, হোমিও ওষুধের শেষ মেয়াদ কাল পর্যন্ত সেবন চলবে।

পথ্য ও ব্যবস্থা: 
কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন, গরুর মাংস ও অতিরিক্ত টক, ঝাল, গুরূপাক আহার ও এলার্জি খাবার খাওয়া নিষেধ। সর্বদা প্রফুল্ল মন ও বিশ্রাম রাখবে। অতিরিক্ত পরিশ্রম ও ভারী কাজ কখনও করা উচিত নয়।

সর্তকতা: 
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা করা মানেই সংক্রমণ নয়। অন্য কোনো কারণেও এটা হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অযথা ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

প্রতিরোধে করণীয়:
▶এ সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং প্রচুর পানি বা তরল পান করতে হবে। 
▶ প্রস্রাবের বেগ আসার সাথে সাথে প্রস্রাব করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 
▶ প্রস্রাব আটকে না রাখা। যখনই বেগ আসে তখনই প্রস্রাব করা।
▶  ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ কমে যায়, তা খাওয়ার অভ্যাস করা। 
▶ কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
▶  বাথরুম ব্যবহারের পর টয়লেট টিস্যু পেছন হতে সামনের দিকে না এনে, সামনে হতে পিছনের দিকে ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে মলদ্বারের জীবাণু মূত্রপথে এসে সংক্রমণ না করতে পারে।
▶  মুত্রত্যাগের পর যথেষ্ট পানি ব্যবহার করতে হবে। শারীরিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
▶  ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। মলত্যাগে যন্ত্রণা।
▶  যৌন সহবাসের পূর্বে প্রস্রাব ত্যাগ করতে হবে। এতে মূত্রনালীতে আসা সব জীবাণু পরিষ্কার হয়।
▶ মেয়েরা স্যানিটারি প্যাড ঘন ঘন বদলিয়ে নেবেন।
▶ মেয়েদের ডিওডারেন্ট ব্যবহার না করাই উত্তম। এগুলো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে।
▶ মুসলমানি বা সারকামসিশন করানো হলে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
▶ খুব অটিসটি অন্তর্বাস না পরা। সুতি কাপড় আর্দ্রতা শুষে নেয়। তাই সুতি অন্তর্বাস পরিধান করা উত্তম।

রোগী বিবরণঃ বয়স্ক রোগীর মূত্র নালীর ইনফেশনের কারণে প্রস্রাবে তীব্র জ্বালা পোড়ায় সারা রাত ঘুমাতে পারে না, রাতে বিছানায় শয়ন করলে হাত পা চাবায়/ ব্যথা করে, ম্যাসেস করতে বাধ্য হয়, মুখ তিতো, ঠোঁট, জিহ্বার তালু শুকে যায়, গরমে কাতর, কোষ্ঠকাঠিন্য, এরূপ লক্ষণে নেট্রাম মিউর ২০০ থেকে একটি গ্লোবিউস ২ ড্রাম পানির শিশিতে দশবার ঝাঁকি দিয়ে দু'দাগ ওষুধ দু'দিন সকালে সেবনের একমাস পর ১৫দিন পর IM পূর্বের নিয়মে সেবনের একমাস পর 10M অনুরূপ পদ্ধতিতে সেবনের দেড়মাস পরে 50M অনুরূপ পদ্ধতিতে দুইমাস পরে CM প্রয়োগে অতুলনীয় আরোগ্য।

রোগী বিবরণঃ ৩০ বছরের যুবকের মূত্র নালীর ইনফেশনের কারণে প্রস্রাবে তীব্র জ্বালা পোড়ায় অনেক চিকিৎসায় ব্যর্থ, তথ্য অনুসন্ধানে প্রস্রাব করার সময় বিভিন্ন স্থানে তীব্র জ্বালা পোড়া করতে থাকে, পায়খানা নরম অথচ কুন্থন বা চাপ না দিলে পায়খানা হতে চায় না, জিহ্ববায়, ঠোঁটে গালে সাদা ভাতের মত ঘা মাঝে মাঝে হয়, খাওয়া ও ঘুম স্বাভাবিক ছিল, বর্তমানে সারা রাত ধরে জ্বালাপোড়া করতে থাকে, এরূপ লক্ষণে এসিড নাইট্রিক M/1 থেকে একটি গ্লোবিউস এক গ্লাস পানিতে ঘুটিয়ে দুই চা-চামচ সেব্য, এ পদ্ধতিতে দুই ঘণ্টা পরপর ১৫দিন পর M/2 থেকে M/15 প্রয়োগের ১৫দিন পর 10M পূর্বের পদ্ধতিতে সেবনের দেড়মাস পরে 50M, CM প্রয়োগে সম্পূর্ণরূপে অতুলনীয় আরোগ্য।

কপি রাইট-  ড. মোঃ আরমান আলী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ