প্রসূতিকাল - Puerperium, তৃতীয় বর্ষ - চতুর্থ অধ্যায়

চতুর্থ অধ্যায়

প্রসূতিকাল
Puerperium











প্রশ্ন- পিউরপেরিয়াম বা প্রসবোত্তর কাল বলিতে কি বুঝ?

উত্তর: পিউরপেরিয়াম বা প্রসবোত্তর কাল (Puerperium): প্রসবের সময় জরায়ুর আকার বৃদ্ধি পাইয়া যে অবস্থায় থাকে, প্রসবের পর তাহা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসে। প্রসবের পর প্রজনন সংক্রান্ত যন্ত্রাবলী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া না আসা পর্যন্ত পর্যায়কে প্রসবোত্তরকাল বা পিউরপেরিয়াম বলে। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসিতে ৬ হইতে ৮ সপ্তাহ সময় লাগে।





প্রশ্ন- “(লোচিয়া) কি? লোকিয়ার প্রকারভেদ আলোচনা কর।
উত্তর: লোকিয়া (Lochia): প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল পড়িয়া যাওয়ার পর পিউরপেরিয়ামের প্রথম ৩ বা ৪ সপ্তাহ যাবাত জরায়ু গাত্র হইতে যে অল্প অল্প রক্তস্রাব হইয়া থাকে উহাকে লেকিয়া স্রাব বলে। জরায়ু গাত্রের যে স্থানটিতে প্লাসেন্টা লাগিয়াছিল প্রধানত সেইস্থান হইতে এই রক্ত মোক্ষণ হইয়া থাকে। ফুল পড়ার ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত এই লেকিয়া স্রাব ঘোর রক্তবর্ণের থাকে, ২৪ ঘন্টা পর হইতে এই স্রাব ক্রমশঃ ফ্যাকাশে হইয়া আসে।





প্রশ্ন-  লোকিয়ার প্রকারভেদ আলোচনা কর।

উত্তর: লোকিয়ার প্রকারভেদ- নিম্নে লোকিয়ার প্রকারভেদ আলোচনা করা
হইল। যথা-
১) লোকিয়া রুব্রা (Lochia Rubra)- গর্ভস্থ শিশু ভূমিষ্ট হইবার পর প্রথম ৩-৪ দিন গর্ভফুলের আবদ্ধ স্থান হইলে লাল রক্ত বাহির হয়। এই লাল রক্তের সহিত জরায়ু ঝিল্লী এবং কোরিয়ানের খণ্ড মিশ্রিত থাকে। ইহাকে লোকিয়া রব্রা বলে।
২) লোকিয়া সেরোসা (Lichia Serosa): শিশু জন্মের ৫/৬ দিন পরে
লোকিয়ার লাল রক্তের ভাগ হ্রাস পায় এবং ফ্যাকাশে হইয়া যায়। ইহাকে লোকিয়া সেরোসা বলে।
৩) লোকিয়া অ্যালবা (Lochia Alba): প্রসবের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে লোকিযার রং পীতাভ আকার ধারণ করে। ইহাকে লোকিয়া অ্যালবা বলে।
৪) দুর্গন্ধযুক্ত লোকিয়া (Offensive Lochia): অনেক সময় ফুল জরায়ু
গাত্র হইতে অপসৃত হওয়ার সময় ঐ স্থানের বিচ্ছিন্ন ঝিলীর টুকরা যদি থাকিয়া যায় তাহার পচনের ফলে জরায়ু জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হইলে স্রাবে দুর্গন্ধ হয় এবং জরায়ু ও তলপেটে বেদনা হয়। ইহার সঙ্গে জ্বরও থাকে।





প্রশ্ন-  পিউরপরিয়াম বা প্রসবোত্তর কালের স্বাভাবিক পরিবর্তন কিভাবে হয় আলোচনা কর।

উত্তর: প্রসবোত্তরকালে কতকগুলি স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটিয়া থাকে। নিম্নে পরিবর্তনসমূহ আলোচনা করা হইল-
১) জরায়ুর স্রাব বা লিাকিয়া- শিশু ভূমিষ্ট হইবার পর জরায়ু হইতে জরায়ু স্রাব নির্গত হয় এবং ইহা দুই হইতে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে। প্রথম ৩-৪ দিন গর্ভফুলের আবদ্ধ স্থান হইতে লাল রক্ত বাহির হয়। ইহাকে লোকিয়া রুব্রা বলে। এই লাল রক্তের সহিত জরায়ু ঝিল্লী এবং কোরিয়ানের খণ্ড মিশ্রিত থাকে। ইহার পর রক্তের ভাগ কমিয়া যায় এবং রং ফ্যাকাশে হয়, ইহাকে লোকিয়া সেরোসা বলে। দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে লোকিয়ার রং পীতাভ ধরণের হয়। ইহাকে লোকিয়া অ্যালবা বলে। সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশী লোকিয়ার ভিতর রক্তের চিহ্ন বর্তমান থাকে না। দ্বিতীয় সপ্তাহের রক্তের পরিমাণ রোজ ৪-৫ ছটাকের মত থাকে, এজন্য অবশ্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।

২) ইনভলিউশান বা জরায়ু ক্রমশঃ গুটাইয়া স্বাভাবিক হওয়া- জরায়ুর আকার, শক্তি এবং অবস্থান স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসিবার নাম ইনভলিউশান বা জরায়ু ক্রমিক গতির সঙ্গে সঙ্গেই যোনিপথ, জরায়ু বন্ধনী এবং বস্তিদেশের মেঝের পেশীগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসে। জরায়ু বন্ধনীগুলি এবং বস্তিদেশের মেঝের পেশীগুলি যদি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া না আসে এবং স্থায়ীভাবে ঢিলা হইয়া থাকে, তাহা হইলে অদূর ভবিষ্যতে জরায়ুর স্থানচ্যুতি হইবার সম্ভাবনা থাকে। জরায়ু ক্রমশ গুটাইয়া ছোট হইবার ক্রমগতির সময়ে জরায়ুর আভ্যন্তরীণ আবরণ জরায়ু স্রাবের ভিতর পরিত্যক্ত হয় এবং জরায়ুর নূতন শৈষ্মিক ঝিলী উক্ত আবরণ স্থান দখল করে। শিশু ভূমিষ্টি হইবার পর এবং গর্ভফুল বাহির হইবার পর জরায়ুর পেশীগুলি রক্তবহনকারী শিরা ও ধমনীগুলিকে সংকুচিত করে এবং পরবর্তীকালে রক্তবহনকারী শিরা ও ধমনীগুলিতে রক্ত জমাট বাঁধে। ইহার ফলে জরায়ুতে খুব কম রক্ত সঞ্চালিত হইয়া থাকে।
জরায়ু গুটাইয়া ছোট হইবার ক্রমগতি শেষ হইতে প্রায় ৬ সপ্তাহ সময় লাগে এবং এই সময়ের মধ্যে জরায়ুর ওজন ২ পাউন্ড হইতে ২ আউন্সে গিয়া দাঁড়ায়। এক সপ্তাহের শেষে জরায়ুর ওজন ২ পাউন্ড হইতে কমিয়া ১ পাউন্ড হয় এবং সার্ভিক্সে ১ আঙ্গুল কিংবা ২ আঙ্গুল প্রবেশ করানো যায়। জরায়ুর সর্বোচ্চ অংশের নিচে নামিয়া যাইবার হার দ্বারা জরায়ু সংকোচনের হার পরিমাপ করা যায়। প্রসবের প্রথম দিনে জরায়ুকে পিউবিসের ৫ ইঞ্চির কিছুটা উপরে পাওয়া যায়। জরায়ুর সর্বোচ্চ অংশের উচ্চতা দৈনিক প্রায় ০.৫ ইঞ্চি করিয়া কমিবার ফলে, সপ্তম দিবসে জরায়ুর সর্বোচ্চ অংশের উচ্চতা প্রায় ৩ ইঞ্চিতে গিয়া দাঁড়ায় এবং চতুর্দশ দিবসে পিউবিসের সমতলে জরায়ুর সর্বোচ্চ অংশ পাওয়া যায়।
যদি জরায়ুর ভিতরে রক্তের ডেলা থাকিয়া যায় এবং বিশেষ করিয়া ইহার সহিত যদি কোন সংক্রামক রোগ জড়িত থাকে তাহা হইলে জরায়ুর গুটানোর গতি খুবই শ্লথ হইয়া পড়ে।

৩) কলোস্ট্রাম- প্রসব অবস্থার শেষে এবং প্রসবের পর প্রথম কয়েকদিন স্তন হইতে একটি পদার্থ বাহির হয় ইহাকে কলোস্ট্রাম বলে। ইহা স্তনের বোঁটা হইতে বাহির হয়। ইহা হলদেটে সাদা রঙের হয় এবং ইহাতে Serum Albumin এবং স্তনের গ্রন্থিতে এপিথেলিয়‍্যাল কোষ থাকে। ইহাতে চিনি, ফ্যাট, লবণ প্রভৃতি কম থাকে এবং প্রোটিন বেশী থাকে।






প্রশ্ন- প্রসবোত্তর কাল বা পিউরপেরিয়ামের ব্যবস্থাপনা লিখ। 

উত্তর: প্রসবোত্তরকালে প্রসূতির নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি উপর নজর দিতে হইবে। যথা-
১) সন্তান প্রসবের ১২ ঘন্টার মধ্যে রোগিনীর প্রস্রাব করাইতে হইবে। মূত্রাশয়ের প্রদাহ যাহাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
২) রোগিনীর যোনিপ্রদেশ এবং শুকনা রক্তের চারিপাশের ত্বক পরিষ্কার রাখিতে হইবে। এমনভাবে ইহা পরিষ্কার করিতে হইবে যাহাতে কোন প্রকারেরই জননপথ জীবাণুদুষ্ট না হইতে পারে।
৩) প্রসবোত্তকালে রোগিনীর সুনিদ্রার ব্যবস্থা করিতে হইবে।
৪) দেহের তাপ, হাতের নাড়ী ও জরায়ুর টানের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
৫) প্রসূতির খাদ্য, বিশ্রাম, শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
৬) বিছানায় শুইয়া থাকার জন্য কিছুটা কোষ্ঠবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, এখলে মৃদু জোলাপ দেওয়া উচিত।
৭) সহজ পাচ্য পথ্য, শাক সবজি, ফল, দুধ, মাংস, ডিম প্রভৃতি খাইতে দিতে হইবে।
৮। পাতলা ও ঢিলা আরামপ্রদ পোষাক পসৃতিকে পরিধান করিতে দিতে হইবে।
৯) শিশুকে স্তন দেওয়ার পূর্বে স্তন ও স্তনের বোঁটা গরম পানি ও তুলার সাহান্তে মুছিয়া দিতে হইবে।
১০) পেশীসমূহের স্বাভাবিক শক্তি ফিরাইয়া আনার জন্য হালকা ব্যায়ামের ব্যবস্থা অবশ্যই করিতে হইবে।





প্রশ্ন-  প্রসবাস্তিক 'লায়িং ইন' অবস্থার ব্যবস্থাপনা রিখ।

উত্তর: প্রসবাস্তিক 'লায়িং ইন' অবস্থার ব্যবস্থাপনা- প্রসবের পর যতদিন পর্যন্ত প্রসূতি শয্যাশায়ী থাকে এবং পূর্ণ সুস্থ না হয় এই সময়কে বলা হয় Lying im Period। এই সময় কমপক্ষে ১৪ দিন এবং ইহা ২৮ দিনের বেশী হওয়া উচিত নয়। এই অবস্থায় ধাত্রীক যে যে বিষয়ে বিশেষভাবে নজর রাখিতে হইবে তাহ হইল-
১) সাধারণ যত্ন-ইহার মধ্যে আছে খাদ্য, বিশ্রাম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি।
২) নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।
৩) পেশী ঠিকমত স্বাভাবিক কিনা তাহা দেখা।
৪) স্বাভাবিকভাবে শিশু দুগ্ধ পানে সক্ষম কিনা তাহা পর্যবেক্ষণ।
৫) শিশুর প্রতি বিশেষ যত্ন।
৬) স্বাভাবিক খাদ্য প্রদান।
৭) প্রতিবার খাবারের পর কিছু সময় ধরিয়া ঘুমানো।
৮) প্রসূতি ও শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বিছানাপত্র ব্যবস্থা এবং জীবাণুনাশক দ্রব্যাদি ব্যবহার।
৯) দেহের তাপ ও নাড়ীর গতি পরীক্ষা করা।
১০) মূত্রথলী বা ব্লাডার ঠিকমত কাজ করে কিনা, ঠিকভাবে প্রস্রাব হয় কিনা তাহা পর্যবেক্ষণ করা।
১১) জরায়ু নালী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসিয়াছে কিনা তাহা দেখা।
১২) প্রসবকালে পেরিনিয়াম ছিঁড়িয়া গেলে সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা ও নিয়মিত স্থানিকভাবে এন্টিসেপটিক ঔষধ প্রয়োগ করা।






প্রশ্ন-  প্রসবোত্তরকালে পোস্ট নেটাল পরীক্ষা কখন করা হয়। পোস্ট নেটাল পরীক্ষায় কি কি পরীক্ষা করা হয় বিবরণ দাও।

উত্তর: প্রসূতি সুস্থ হইয়া গেলে ধাত্রী বিদায় নেওয়ার আগে প্রসূতিকে ভালভাবে পোস্ট নেটাল পরীক্ষা করিতে হইবে। এই অবস্থায় নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করিতে হইবে। যথা-
১) রোগিনীর পেলভিক যন্ত্রাদি সুস্থ কিনা তাহা দেখা প্রয়োজন।
২) রোগিনীর স্বাস্থ্য স্বাভাবিক হইতেছে কিনা।
৩) রোগিনীর ডিসাচার্জ স্বাভাবিক হইয়া বন্ধ হইয়াছে কিনা।
৪) রোগিনী স্বাভাবিক নড়াচড়া ও চলাফেরা করিতে পারে কিনা।
৫) শিশু ঠিকভাবে মাতৃদুগ্ধ পান করিতে পারে কিনা।
৬) রোগিনীর অন্যকোন অসুস্থতা আছে কিনা।
৭) জরায়ুর রেট্রোভারশন বা অন্য অসুস্থতা কিছু আছে কিনা।
৮) ল্যাসারেশন প্রভৃতি থাকিলে তাহা পূর্ণ আরোগ্য হইয়াছে কিনা।
৯) রোগিনী ও শিশুর পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান।







প্রশ্ন- প্রসবের পর ব্যায়ামের উপকারিতা লিখ।

উত্তর: প্রসবের পর ব্যায়ামের উপকারিতাগুলি নিম্নে প্রদত্ত হইল। যথা-
১) প্রসবের সময় উদর ও যোনিপথের চারিধারের যে পেশীগুলি ঢিলা হইয়া যায়, প্রসবের পর ব্যায়াম করিলে ঐ পেশীগুলি সবল হয়।
২) ব্যায়ামের ফলে স্তনের গঠন ভাল হয় এবং সন্তান প্রচুর দুধ পায়।
৩) হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, খাওয়ার রুচি হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৪) বসার, হাঁটার ও দাঁড়ানোর ভঙ্গি সতেজ ও সুন্দরও হয়।
৫) প্রসূতির মন প্রফুল্ল থাকে এবং মনের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়।







প্রশ্ন-  হাসপাতাল হইতে কখন প্রসূতি ছুটি লাভ করে?

উত্তর: শিশুকে কিভাবে স্নান করাইতে হয়, কিভাবেই বা নড়াচাড়া করিতে
হয় তাহা শিখিবার পর প্রসবোত্তর কালের চতুর্দশ দিবসে মা হাসপাতাল হইতে নিজের গৃহে আসিয়াও শিশুকে যাহাতে সেইভাবেই দুধ খাওয়ায় মাকে সেই নির্দেশ দিতে হইবে। তাহা ছাঁড়া গৃহ কর্ম আরম্ভ করিবার পর মায়ের বুকের দুধ কিছুটা যে কমিয়া যাইবে তাহাও মাকে জানাইয়া দিতে হইবে। হেলথ ভিজিটারের নির্দেশ অনুযায়ী শিশুকে যাহাতে নিয়মিত চিকিৎসাগারে পাঠানো হয় এবং মা যাহাতে প্রসূতি সদনে আসেন, তাহাও প্রসূতিকে বলিয়া দিতে হইবে। হাসপাতাল হইতে মা এবং শিশুকে ছাড়িয়া দিবার ঠিক পূর্বে ডাক্তার দ্বারা ভালভাবে পরীক্ষা করাইয়া তাহার পর প্রসূতিকে ছাড়িতে হইবে।







প্রশ্ন-  প্রসবোত্তর কালে গাত্রতাপ বৃদ্ধির কারণ কি?

উত্তর : প্রসবোত্তরকালে রোগিনীর গাত্রতাপ বৃদ্ধির কারণগুলি নিম্নে দেওয়া হইল।
১) কোন কারণে উচ্চসিত ভাবাবেগ ঘটিলে দেহের তাপ বাড়িয়া যায় এবং হাতের নাড়ীর গতিও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।
২) স্তনে অতিরিক্ত দুধ জমা হইলে গাত্রতাপ বৃদ্ধি পাইতে পারে। এই অবস্থায় স্তনও স্পর্শকাতর হয়।
৩) কোষ্ঠবদ্ধতার কারণে দেহের তাপ বাড়িতে পারে।
৪) সন্তান প্রসবের ব্যাপার ছাড়া অন্যান্য কারণে যেমন সর্দি বা ইনফ্লুয়েঞ্জায় দেহের তাপ বৃদ্ধি পায়।
৫) মূত্রপথ ও স্তন জীবাণুদুষ্ট হইবার কারণেও দেহের তাপ বৃদ্ধি পায়।







প্রশ্ন- প্রসবোত্তরকালে প্রসবজনিত জ্বর (Puerpereal Pyrexia) কাহাকে বলে?

উত্তর: সন্তান প্রসব বা গর্ভপাতের দুই সপ্তাহের মধ্যে কোন রোগিনীর ১০৪ ফাঃ বা তামার বেশী তাপমাত্রা লইয়া জ্বর উঠিলে তখন সে জ্বরকে প্রসবজনিত জ্বর বা পিউরপেরিয়াল পাইরেক্সি বলা হয়।
 






প্রশ্ন-  প্রসবোত্তরকালে প্রসবজনিত জ্বর বা পিওরপেরিয়াল পাইরেক্সিয়ার কারণসমূহ কি কি?

উত্তর : নানা কারণে প্রসবজনিত জ্বর হইতে পারে। তন্মধ্যে নিম্নের কারণগুলি অন্যতম। যথা-
১) জেনিট্যাল ট্রাক্টের কোন রকম ইনফেকশন যাহা প্রসব কালে বা প্রসবের পর হইতে পারে।
২) ইউরিনারী ট্রাক্টে জীবাণু সংক্রমণ।
৩) বক্ষ বা দুগ্ধবাহী নালীর জন্য। স্তনে জীবাণু সংক্রমণ।
৪) প্রম্বোফ্লেবাইটিস বা জননতন্ত্রের শিরাতে রক্ত জমিয়া যাওয়া প্রভৃতি।






প্রশ্ন-  পিওরপেরাল পাইরেক্সিয়া বা প্রসবোত্তর কালে জ্বরের ব্যবস্থাপনা বা চিকিৎসা লিখ।
উত্তর: রোগিনীর দেহের তাপ বৃদ্ধি পাইলে এবং তাহা চলিতে থাকিলে ও সাথে মাথা ধরা, মাথা ব্যথা, অসাড়তা, খিচুনী প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাহার চিকিৎসা করা উচিত।
রোগিনী সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখিতে হইবে। প্রয়োজনবোধে হাসপাতালে রোগিনীকে পাঠানো উচিত। জীবাণুনাশক ঔষধ ব্যবহার করিতে হইবে। বেদনা নিবারণের জন্য বেদনানাশক ঔষধ দিতে হইবে। বিশ্রাম ও ঘুমের ব্যবস্থা করিতে হইবে। প্রয়োজন বোধে রোগিনীকে রক্তও দিতে হইবে। পেরিনিয়মের ক্ষতে জীবাণু সংক্রমণ ঘটিলে সেলাই খুলিয়া এন্টিসেপটিক লোশন দ্বারা ক্ষত ধৌত করিয়া দিতে হইবে।





প্রশ্ন-  ডিসঅর্ডার অব পোস্টপার্টম কি কি?

উত্তর: ডিসঅর্ডার অব পোস্ট পার্টম হইল-
১) দুর্বল জরায়ু ও প্লাসেন্টার অস্বাভাবিকতার জন্য রক্তক্ষরণ।
২) রক্তহীনতা।
৩) সায়াননিন ট্রেকিকার্ডিয়া।
৪) সক প্রভৃতি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ