এই ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষাথীদের
জন্য প্রযোজ্য।
Hepar Sulphuris - হিপার সালফিউরিস
প্রতিশব্দ : ক্যালসিয়াম সালফেট,
সালফেট অব লাইম, লিভার অব সালফার, হিপার সালফিউরিস ক্যাল্কেরিয়াম, হিপার সালফার।
উৎস : ক্যালসিয়াম সালফাইড (বিশুদ্ধ দগ্ধ ঝিনুক)
ও গন্ধক এই দুইটি দ্রব্যের রাসয়নিক সংযোগ বিচূর্ণাকারে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়।
প্রুভার : ডাঃ হ্যানিমান প্রুভ
করেন।
প্রস্তুত প্রনালী : ক্যালসিয়াম সালফাইড এবং গন্ধক এই দুইটি দ্রব্যের রাসায়নিক সংযোগ ইহা পাওয়া
যায়।
ক্রিয়াস্থান : চর্ম, শ্লৈষ্মিক
ঝিল্লী, গ্রন্থিসমূহ, শোষণ ও ক্ষরণকারী যন্ত্র সকল ও লালা ক্ষরণকারী গ্রন্থিসমূহের
উপর ইহা ক্রিয়া করিয়া থাকে। স্নায়ুর উপর ক্রিয়া করিয়া ইহা উহাতে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে
এবং স্পর্শ সহিষ্কুতা উৎপন্ন করে।
ধাতু : ইহা একটি গভীর এন্টিসোরিক,
এন্টিসাইকোটিক ও এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ। পারদের অপব্যবহারের পর ইহা খুব কার্যকরী ।
মানসিক লক্ষণ :
১. স্মরণ শক্তি হ্রাস-কোনও স্থান ও কথা বলার বিষয়ে।
২. সবসময় অপরের দোষ খোজায় ব্যস্ত এবং কলহ করিবার জন্য একেবারে
প্রস্তুত হয়ে থাকে।
৩. সামান্য প্রতিবাদ সহ্য করিতে পারেনা।
৪. অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তুমুল অবস্থার সৃষ্টি করে, মেজাজ
রুক্ষ।
৫. অনেক সময় সামান্য কারনে ক্রোধের পরিবর্তে কাঁদিতে দেখা
যায়।
চরিত্রগত লক্ষণ :
১. সামান্য ঠান্ডয় রোগী বিচলিত হইয়া পড়ে-সহ্য হয় না । ঠান্ডা
লাগিলে রোগীর গাল ও গলা ফোলে-সর্দ্দি জ্বর হয় ।
২. শরীরের কোন স্থান সামান্য মাত্রায় কাটিয়া বা ছিঁড়িয়া গেলে
তাহা না পাকিয়া সারে না।
৩. ক্ষত স্পর্শ কাতরতা বেদনা।
৪. হাঁপানিতে গলা সোঁ সোঁ ও ঘড় ঘড় করে। দমবন্ধ হইবার মত হয়,
শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাসে বৃদ্ধি।
৫. সামান্য কারনে পাকস্থলীর বিকৃতি, দুগন্ধযুক্ত উদরাময়।
৬. ঘুংড়ি কাশি – কাশিতে যেন নিঃশ্বাস আটকাইয়া যায় বা গলা
বন্ধ হইয়া যায়।
৭. ক্ষত হইতে পঁচা পানির ন্যায় গন্ধ রক্তাক্ত পূঁজ বা রস
নির্গত হয়।
৮. গলায় যেন মাছের কাঁটা ফোটাইতেছে এইরুপ বোধ।
৯. দিনরাত ঘর্ম হয় অথচ তাহাতে কোন উপশমই হয় না।
১০. গাত্র চর্ম অস্বস্হ্যকর ।
১১. ফোঁটা ফোঁটা করিয়া
ও ধীর গতিতে প্রস্রাব। প্রস্রাব নির্গত হইবার পূর্বে কিছুক্ষণ বসিয়া থাকিতে হয়। প্রস্রাব
করা শেষ হইলেও মনে হয় আরও কিছু প্রস্রাব ভিতরে রহিয়া গেছে।
বিশেষ লক্ষণ :
১. সকল প্রকার অনুভব বিষয়ে অনুভূতি প্রবণতা।
২. পুরাতন ক্ষতের চারিধারে ছোট ছোট ফুষ্কুড়ি জাতীয় উদ্ভেদ
প্রকাশিত হয় এবং ক্ষত স্থান বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
৩. শরীরের কোন কোন অংশের উপর দিয়ে প্রবল বায়ু বয়ে চলেছে এই
জাতীয় অনুভূতী।
৪. জ্বর নড়াচড়া করিলে
ঘর্ম হয়।
প্রয়োগক্ষেত্র : স্ফোটক, বাগী,
চর্মপীড়া, ঘুংড়ি, কাশি, ফুসফুসের পীড়া, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কোনিমোনিয়া, সর্দ্দি, হাঁপানি,
টনসিল পীড়া, সিফিলিস, ক্ষত, চক্ষুর পীড়া, কর্ণের পীড়া, উদরাময়, অর্জীন, মুত্রথলীর পীড়া,
জ্বর, লিভার পীড়া।
মন : সন্ধায় ও রাত্রে
অত্যন্ত মনেঃকষ্ট, আত্নহত্যার চিন্তা। সামান্য কারণে খিটখিটে হয়ে উঠে। হিংস্র প্রকৃতির
ও দ্রুত কথা বলে।
মাথা : মাথা ঘোরা ও মাথা
বেদনা, মাথা নাড়ালে ও গাড়ীতে চড়লে। প্রতিদিন সকালে নাকের গোড়ায় ও ডানদিকের রগে ছিদ্র
করার মত বেদনা। মাথার চামড়া স্পর্শকাতর ও টাটানি ব্যথা। মাথায় আর্দ্র ঘা, তৎসহ চুলকানি ও জ্বালা। মাথার উপর ঠান্ডা
ঘাম।
চোখ : কর্নিয়ার ক্ষত। আইরাইসি,
তৎসহ পুঁজ; পুঁজযুক্ত
কনজাঙটিভাটিস, চোখ দুটি ও চোখের পাতাদুটি লালবর্ণ ও প্রদাহিত। পড়ার সময় দৃষ্টি ঝাপসা
হয়ে উঠে; দৃষ্টিবস্তু সময় কমে অর্ধেক হয়ে যায়। চোখে যেন মাকড়াসার আস লেগেছে এমন মনে
হয় ।
গলা : ঢোক গেলার সময় গলায়
সুঁচফোটার মত বেদনা, বেদনা কান পর্যন্ত প্রসারিত হয়। গলা খাঁকার দিলে শ্লেষ্মা উঠে।
উদর : ভ্রমন করার সময়,
কাশির সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় অথবা স্পর্শ করলে, যকৃৎস্থানে বেদনা, যকৃত টানবোধ; উদরের পুরাতন
উপসর্গ সমুহ।
প্রস্রাব : কোন রকম শক্তি প্রয়োগ
ছাড়াই ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব। প্রস্রাব থলির দুর্বলতা। সর্বদাই মনে হয় কিছুটা প্রস্রাব
রয়ে গেছে। প্রস্রাবে চর্বির মতদানা।
স্ত্রীরোগ : জরায়ু থেকে রক্তস্রাব।
যৌনাঙ্গ ও স্তনের বোটায় চুলকানি, ঋতুকালে বৃদ্ধি। ঋতুস্রাব দেরিতে ও অল্প পরিমানে
হয়। তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রদর স্রাব।
টনসিল : ফ্যারিনজাইটিস ও
টনসিলাইটিস রোগ, ফ্যারিংসে ছোট ছোট দানা দানা যুক্ত ফুস্কুড়ি, তাহাতে রস পড়ে, ফোলা,
গলায় শ্লেষ্মা জমে কিন্তু সহজে উঠে না। টনসিল খুব ফোলে এবং রোগীর গলায় কাঁটা বেধার
মত বেদনা অনুভব করে। পুরাতন অবস্থায় মার্ককুরিয়াসে উপকার না হলে হিপার প্রযোজ্য।
জ্বর : অতিশয় শীত ভাব, সর্ব
শরীরে চুলকানি ও আমবাত এবং তাপ আরম্ভের সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলির অবসান-শীতাবস্থায় পিপাসার
অভাব, তাপাবস্থায় পিপাসা। বেলা ৩-৪ টা হইতে সমস্ত রাত্রি পর্যন্ত জ্বর ভোগে। নড়াচড়া
করিলে ঘর্ম হয়। রোগীর জিহবায় ঘা হয় ।
বৃদ্ধি : আক্রান্ত পার্শ্বে
শয়নে, ঠান্ডা বাতাসে, অনাবৃত দেহে, ঠান্ডা খাদ্যও পানীয়, আক্রান্ত স্থান স্পর্শে, পারদ
ও কুইনাইন অপব্যবহারে।
উপশম : সর্ব প্রকার গরম
ঘরে, বৃষ্টির দিনে ও ভিজা ঠান্ডায় আহারের পর।
পরবর্তী ঔষধ : একোনাইট,
ব্রায়োনিয়া, বেলেডোনা, এব্রোটেনাম, আযোডিনাম, মার্কুরিয়াস, নাক্স ভম, রাসট্রক্স, সিপিয়া,
সাইলিসিয়া, স্পজ্জিয়া, এসিড নাইট্রিক।
ক্রিয়ানশক : আর্সেনিক, বেলেডোনা,
ক্যামোমিলা, এসিড এসেটিক, সাইলেসিয়া।
ক্রিয়া স্থিতিকাল : ১ হইতে ৭ দিন।
ক্রাম : ৩x হইতে ২০০ শক্তি।
ডাঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক :- ফেনী হোমিওপ্যাথিক
মেডিকেল কলেজ।
যোগাযোগ
:- ফরাজী হোমিও হল।
সদর হাসপাতাল, উত্তর বিরিঞ্চি রোড় - ফেনী
0 মন্তব্যসমূহ