এই ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীদের
জন্য প্রযোজ্য ।
Acidum
Phosphoricum - এসিডাম ফসফোরিকাম
প্রতিশব্দ :- ফস্ফোরিক এসিড, অর্থ ফসফোরিক এসিড, এসিড ফসফেরিক ।
বর্ণনা :- ইহা একপ্রকার স্বাদযুক্ত এসিড কিন্তু বর্ণ ও গন্ধহীন
তরল পদার্থ । আপেক্ষিক গুরুত্ব ১.৭১৪ । ইহা হাড় হইতে নিষ্কাশন করিয়া সুরাসার ও জলে
সমান অনুপাতে দ্রবনীয় ।
ঊৎস ও প্রস্তুত প্রণালী
:- ফসফোরাস ও অক্সিজেন সহযোগে প্রস্তুত ইহা একপ্রকার
অম্ল । ৯০ ভাগ পরিশ্রুত জলে ১ ভাগ আসল এসিড দ্রব করিয়া উহার ১০ ভাগ, ৯০ ভাগ এলকোহলে
মিশাইলে ২x শক্তি প্রস্তুত হয় ।
প্রুভার :- এগারজন প্রুভারসহ মহত্না হ্যানিম্যান এই ঔষধটি প্রুভ
করেন ।
ক্রিয়াস্থান :- স্নায়ুমন্ডলী, অন্ত্রগ্রন্থি, অস্থি ও চর্মের উপর এই
ঔষধের বিশেষ ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় ।
মানসিক লক্ষণ :-
রোগী
অমনোযোগী, স্মৃতি শক্তিহীন এবং নিরুদ্যম ।
উদাসীন
ও অনাসক্ত, মনোভাবগুলি একত্রিত করিতে পারে না, উপযোগী শব্দটি খুজিয়া পায় না ।
শোক
ও মানসিক আবেগের কুফল ।
তাহার
চুতুর্দিকে যাহা ঘটুক সেদিকে কোন খেয়াল না থাকেনা ।
প্রেমে
ব্যর্থ, শোক, দুঃখ বা আত্নীয় স্বজন হইতে দুরে থাকার কারনে স্নায়ুবিক দুর্বলতা ।
চরিত্রগত লক্ষণ
:-
১.
স্থির প্রলাপ, শিরঃপীড়া, মাথার উপরিভাগে বেদনা । চক্ষুতে চাপ বোধ, কর্ণে ভোঁ ভোঁ শব্দ
।
২.
নাসিকা হইতে কাল বর্ণের রক্ত স্রাব ও ক্ষত মাড়ি ক্ষত ।
৩.
অল্প বয়সে চুলপাকে ও চুল পড়িয়া যায় ।
৪.শরীরেক
ও মানসিক দুর্বলতা ।
৫.
নিদ্রিতাবস্থায় এবং পস্রাবের কিংবা বাহ্যের জন্য বেগ দিলে শুক্রক্ষরণ-ধ্বজভঙ্গ বা পুরুষত্বহীনতা
।
৬.
প্রচুর পরিমাণে দুগ্ধের ন্যায় সাদা বর্ণের মূত্রত্যাগ ।
৭. জিহ্বার মধ্যভাগে লালদাগ, দুর্নিবার পিপাসা ।
৮.
বেদনাবিহীন উদরাময় ও আসাড়ে ভেদ, উদারাময়ে দুর্বলতার অভাব ।
৯.
অতিরিক্ত ইন্দ্রিয় দোষজনিত পীড়া ।
১০.
হস্তমৈথুনজনিত যুবকদের ব্রণ, রক্ত স্ফোটক ।
১১.
অধিকদিন ধরিয়া সন্তানকে স্তন্য পান করানো । শ্বেতপ্রদর প্রমেহ স্রাব ইত্যাদি কারণবশতঃ
দুর্বলতা ।
১২.
গাঁড়ে বাতের ন্যায় বেদনা ।
১৩.
ফুসফুসের পীড়ায় বুকের ভীষণ দুর্বলতা, ল্যারিনজাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস প্রভৃতি পীড়ায় বুকের
নিম্নভাগ হইতে কুটকুট করিয়া কাশি হয় । কাশি সন্ধা ও শুইবার পর বৃদ্ধি । গয়ার সকাল বেলায়
উঠে, স্বাদ লোনা ।
১৪.
হিপজয়েন্ট পীড়া, গ্লান্ডের বেদনা, পায়ের ক্ষত ।
১৫.
শরীরে পিপিলিকা চলার ন্যায় সুড়সুড় করে ।
১৬.
রোগী অজ্ঞানভাবে পড়িয়া থাকে ,ডাকিলে সাড়া দেয়
না কিন্তু যখন জাগে তখন বেশ জ্ঞান থাকে ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র
:- শিরঃপীড়া, টাইফয়েড, জ্বর, স্বপ্নদোষ, উদরাময়, কাশি,
রক্ষঃপীড়া, ডায়েবেটিস, অস্থিপীড়া, স্নায়বিক দুর্বলতা, কলেরা, স্ত্রীরোগ, চুলউঠা ।
ধাতু দুর্বলতা ও
স্বপ্নদোষ :- ধ্বজবঙ্গ- হস্ত মৈথুনের
জন্যই অনেক সময় এই পীড়া হইয়া থাকে । বাহ্য অথবা প্রস্রাবের বেগ দিবার সময় শুক্র ক্ষরণ
হয়ে থাকে । নিদ্রিত বা জাগ্রত অবস্থায় শুক্রক্ষরণ, সেই জন্য মাথাঘোরা । সমস্ত শরীর
যেন কাঁপিতে থাকে, দুর্বলতা, দাঁড়াইতে পারেনা, মনে হয় যেন পড়িয়া যাইবে । পুরুষত্বহীনতা,
লিঙ্গ সামান্য উত্থিত হয় বা একেবারেই হয় না,
স্ত্রী সহবাসে অতি শীঘ্র শুক্রক্ষরন হয় । বেদনা কোথায়াও থাকেনা, কিন্তু মেরুদন্ডে
জ্বালা অনুভূতি হয় ।
কাশি :- সন্ধ্যার পর বা শয়নের পর কাশির বৃদ্ধি, প্রাতঃকালে গয়ার উঠে । গলায় হরিদ্রা বর্ণ বা পূজ
ও লালা মিশ্রিত এবং লবনাস্বাদুক্ত । বাতাস লাগিলেই নতুন সর্দি উপস্থিত হয় । রোগী ঠান্ডা
বাতাস সহ্য করিতে পারে না । সেই জন্য সর্বদাই বস্ত্র দ্বারা ঢাকিয়া রাখিতে চাহে ।
বক্ষঃপীড়া :- মস্তিষ্কের ক্লান্তি
ও দুর্বলতার পরিণামে বক্ষরোগ উপস্থিত হইবার প্রবণতা থাকে । যদি উদরাময় দেখা দেয় তাহা
হইলে বক্ষরোগ নিবৃত্ত হয় । শ্বাস প্রশ্বাস কষ্টদায়ক হয়, কাশি দেখা দেয় । বুকের মধ্যে
কষ্ট হইতে থাকে এবং উহার পরিণতি স্বরুপ ফুসফুসের যান্ত্রিক পরিবর্তন ঘটে ।
ডায়াবেটিস ও বহুমূত্র
:- রোগের প্রথম হইতেই অতি
প্রচুর পরিমানে এবং অনেকবার শর্করাযুক্ত প্রস্রাব ত্যাগ – সেজন্য রাত্রিতে অনেক বার
উঠিতে হয়, প্রস্রাবের বর্ণ অনেকটা দুধের ন্যায় । অনেক সময় ধারণ শক্তি পর্যন্ত লোপ পায়
এবং আসাড়ে প্রস্রাব নির্গত হয় ।
অস্থিপীড়া :- হিপ ডিজিজ বা ভার্টিব্রাল অস্থিতে ক্ষত প্রযুক্ত মেরুদন্ড
বক্র হইয়া গেলে এই ঔষধ উপকার হইবার সম্ভাবনা । আক্রান্ত স্থানের হাড় যেন ছুরি দ্বারা
কেহ চাঁচিতেছে এইরুপ বোধ হয় । হাড়ের সকল বেদনার ন্যায় এই বেদনাও রাত্রিতে বৃদ্ধি পায়
।
স্ত্রীরোগ :- যে সকল স্ত্রী লোক দুর্বল, রক্তহীন, ঋতুর সময় লিভার বেদনা,
সমস্ত কার্যে উদাসীন, দুর্বলতার জন্য জরায়ু বাহির হইয়া পড়ে । ঋতু খুব শীঘ্র শীঘ্র ও
অধিক পরিমাণে স্রাব হয়, তাহাদের ক্রমশঃ দুর্বল করিয়া ফেলে, জরায়ু ফুলিয়া উঠে, তাহাদের
মনে হয় যেন জরায়ুর মধ্যে বতাস পূর্ণ রহিয়াছে, ঋতুস্রাবের রং কাল ।
চর্ম পীড়া :- ব্রন, বয়ঃব্রন, ক্ষত, তাহাতে অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত পূঁজ
থাকে । জ্বালাকর রক্তবর্ণ উদ্ভেদ । শরীরের বিভিন্নস্থানে পিপিলিকা চলার ন্যায় অনুভূতি
। জ্বরের পর ফোঁড়া হইবার প্রবণতা, রোগীর চুল পড়িয়া যায় ।
বৃদ্ধি :- মানসিক বিকারে, রেতঃপাতে, কথাবার্তায়, অপরিমিত রতি
ক্রিয়ায়, স্পর্শে, বসিয়া থাকিলে, শোকদুঃখে ।
হ্রাস বা উপশম :- সামান্যক্ষন নিদ্রা হইলে, গরমে, সান্তনায়, নড়াচড়ায় ।
সম্বন্ধ :- চায়না, নাক্সভমিকা, এসিড পিক্রিক, ফসফরাস, এসিড ল্যাকটিক
।
পরবর্তী ঔষধ :- ফেরাম, চায়না, লাইকো, নাক্স, সালফার, সেলিনিয়াম, আর্সেনিক,
বেলেডোনা, কষ্টিকাম ।
ক্রিয়ানাশক :- ক্যাম্ফার, কফিয়া, স্ট্যাফিসেগ্রিয়া ।
মায়াজমের :- অ্যান্টি সোরিক, অ্যান্টিসাকোটিক, অ্যান্টিসিফিলিটিক,
অ্যান্টিটিউবার কিউলার,
যে সকল খাদ্য বর্জন করিবে :- রুটি, কফি, ঠান্ডা, পানীয়,
ফল ।
ক্রম :- ২x-২০০ শক্তি ক্রিয়াকাল :- ৪০ দিন।
ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক:- ফেনী হোমিও
প্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
যোগাযোগ:- ফরাজী
হোমিও হল
সদর
হসপাতাল মোড়, উত্তর বিরিঞ্চি রোড়-ফেনী।
মোবাইল:-
০১৮১৪-৩১৯০৩৩
1 মন্তব্যসমূহ
চমৎকার লিখেছেন। নতুনদের জন্য খুবই উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন