এই
ব্লগটি
শুধুমাত্র
নব্য
চিকিৎসক
এবং
শিক্ষার্থীদের
জন্য
প্রযোজ্য
।
Croton Tiglium - ক্রোটন টিগলিয়াম
ক্রোটন টিগের প্রতিশব্দ:-
ক্রোটন
অয়েল , জয়পাল তৈল , গ্রানাটিগলি , ওলিয়ম ক্রেটনিস , পারজিং নাট , জয়পাল , কনকল ।
ক্রোটন টিগের
উৎস:-
ক্রোটন
টিগলিয়ামের বীজ হইতে জয়পাল তৈল পাওয়া যায়, এই তৈল হইতে
ঔষধ প্রস্তুত হয় ।
বর্ণনা:-
জয়পাল বৃক্ষ ১৫ হইতে ২০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হইয়া থাকে । ইহা চির সবুজ বৃক্ষ , শাখা প্রশাখা নলাকৃতি এবং বাকল মসৃণ হইয়া থাকে । পাতাগুলি পরিবর্তনশীল এবং বৃন্তযুক্ত । আগষ্ট হইতে সেপ্টেম্বর মাসে এই সকল গাছে । ফুল ফুটিয়া থাকে । ইহার বীজ আয়ত গোলাকার । বীজগুলি কফি বীজের ন্যায় এবং ইহার বাহিরের আবরণ ফ্যাকাশে বাদামী বর্ণের । শাঁস সাদা বর্ণের ও তৈলাক্ত হইয়া থাকে । ইহার স্বাদ তিক্ত ও অরুচিকর ।
ক্রোটন টিগের প্রাপ্তিস্থান:-
ভারত
বর্ষ , দক্ষিণ এশিয়া ও মালাবার উপত্যকায়
ইহা প্রচুর পরিমাণে জন্মিয়া থাকে ।
ক্রোটন টিগের প্রস্তুত
প্রণালী:-
জয়পালের
বীজের তৈল হইতে বা বীজ হইতে
অরিষ্ট বা বিচূর্ণ প্রস্তুত
হয় । ১ ভাগ
জয়পাল তৈলের সহিত ৯৯ ভাগ এলকোহল
মিশ্রিত করিয়া অরিষ্ট প্রস্তুত হয় । হোমিও ফার্মাকোপীয়ার
নিয়মানুসারে উচ্চক্রমসমূহ প্রস্তুত হইয়া থাকে ।
ক্রোটন টিগের ক্রিয়াস্থান:-
অন্ননালী
এবং চর্মের উপর ক্রোটনের ক্রিয়াদৃষ্ট হয় । অনুপথের শ্লৈষ্মিক
ঝিল্লীর উপর ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া ইহা জলবৎ তরল ভেদের লক্ষণ উৎপন্ন করিয়া থাকে । চর্মের উপর
ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া বিখাউজ বা একজিমার সৃষ্টি
করে ।
পরিচায়ক বা চরিত্রগত
লক্ষণ:-
১ । হলদে রঙের
মতো বাহ্য পিচকারীর ন্যায় বেগে বাহির হয় এবং পানাহারের পরই বাহ্যের বেগ হয় ।
২ । কাশির সহিত
পর্যায়ক্রমে বা চর্মরোগের সহিত
পর্যায়ক্রমে তরল ভেদ হইতে থাকে ।
৩ । স্তনের বোটায়
ঘা অথবা টাটান ভাব , সন্তান স্তন্যপান করিলে স্তন হইতে সেই দিকের কাধের হাড় পর্যন্ত বেদনা কিংবা পৃষ্ঠদেশ পর্যন্ত বেদনা বোধ হয় ।
৪ । স্তন্যপান করিলে
স্তনে যন্ত্রণা ।
৫ । রিগো নামক
চর্মরোগ , তাহাতে ভয়ানক চুলকানি অথচ ধীরে ধীরে চুলকাইলে চুলকানির নিবৃত্তি ।
৬
। উদর শূল সেই সঙ্গে হঠাৎ উদরাময় , স্তন্যপানের পর উদরাময় বৃদ্ধি
।
প্রয়োগ ক্ষেত্র:-
শিশুদের
ঈষৎ পীত বা হরিৎ বর্ণ
মলযুক্ত , বেগে নিঃসরিত উদরাময় , গ্রীষ্মকালীন উদরাময় , চর্মপীড়া , প্রস্রাবের পীড়া , কাশি , বক্ষবেদনা , স্তনবেদনা প্রভৃতিক্ষেত্রে ইহা প্রয়োগ হয় ।
উদরাময় লক্ষণ:-
জলের
মত হলদে বর্ণের তরল মল যদি হঠাৎ
পিচকারীর ন্যায় বেগে নির্গত হয় এবং ঐ বাহ্য যদি
কিছু পান বা আহার করিলেই
বাড়ে , দৌড়াইয়া পায়খানায় ছুটিতে হয় তাহা হইলে ক্রোটনই উত্তম ঔষধ । ক্রোটনে প্রথমে
পেটে এক প্রকার মোচড়ানি
ব্যথা উপস্থিত হয় , তাহাতে বাহ্যের প্রবল বেগ আসে । বাহ্যের রোগী
কিছুটা সুস্থবোধ করে । অন্ত্রের ভিতর
কলকল করিয়া এক প্রকার শব্দ
হয় , মনে হয় যেন অন্ত্র সমূহ জলে পরিপূর্ণ রহিয়াছে ।
কলেরায় ক্রোটন
টিগের লক্ষণ:-
শিশু
কলেরা রোগে ক্রোটনটিগ খুবই উপকারী । মলের বর্ণ
হরিদ্রাভ , পরিমাণে প্রচুর , মল বেগে একচোটে
যেন নির্গত হয় । সহসা পিচকারীর
ন্যায় বেগে তরল মল নিঃসরিত হওয়া
ইহার একটি প্রধান লক্ষণ । সেই সঙ্গে
বমন ও গা বমি
বমি খুব থাকে । সময়ে সময়ে
গা বমি ভাব এত অধিক হয়
যে , সেই জন্য মূৰ্ছাৰ ভাব ও দৃষ্টি শক্তির
হ্রাস পর্যন্ত হয় । পেটে কলিকের
ন্যায় ব্যথা হয় , গরম জলপানে পেটের ব্যথার উপশম । পানাহারের পর
বাহ্য বমি বাড়ে ।
চক্ষুপীড়ায়:-
অক্ষিপত্র দানাযুক্ত , কনীনিকায় পুঁজবটিসমূহ লাল এবং দেখিতে কাচা ভাব । মনে হয় যেন পশ্চাৎ দিকে টানিয়া রহিয়াছে । চক্ষুর চারিদিকে উদ্ভেদ । দক্ষিণ অক্ষিকোটরে টানিয়া রাখার ন্যায় বেদনা । কপালে চাপবোধ সহ বেদনা ।
স্তনের বেদনা:-
শিশু স্তন্য পান আরম্ভ করিলেই স্তন্যদানকারিনীর স্তনাগ্র ব্যথা-বেদনা ইহা দ্বারা আরোগ্য হয় । ডাঃ ফ্যারিংটন বলেন যে স্তন ব্রণের পূর্বরূপ অবস্থায় সন্তান স্তন্যপান করিবার সময় স্তনবৃন্ত হইতে পৃষ্ঠ পর্যন্ত র দ্বারা আকর্ষণের ন্যায় বেদনা লক্ষণে ইহা উপযোগী ।
চর্মপীড়ায়:-
চর্মের
উপর প্রদাহপূর্ণ শক্ত চামড়ার ভাব ( ইরিথিমা নামক চর্মরোগ ) তাহার উপর ও চতুষ্পর্শে ছোট
ছোট ফোস্কার মত উদ্ভেদ উৎপাদিত
হয় । উহারা ।
গায়ে গায়ে বহির্গত হয় এবং তাহা হইতে হরিদ্রাবর্ণের রস নির্গত হয়
এবং ২ / ৩ দিন ধরিয়া
রস পড়িয়া ক্রমশঃ মেড়মেড়ি পড়ে । এই সকল
উদ্ভেদ ভয়ানক চুলকায় , জ্বালা করে এবং সময়ে সময়ে হুল ফোটানবৎ ব্যথা হয় । যাহাদের কোনও
পেটের দোষ আছে তাহাদের চর্মপীড়ায় ক্রোটন উপকারী । ক্রোটনে প্রথমে
পােড়া ফোস্কার ন্যায় উদ্ভেদ হয় এবং উহা ক্রমে পাকে ও পুঁজ হয়
। ইহার জ্বালা ও চুলকানি জলে
ধৌত করিলে কিংবা ঠাণ্ডা বাতাস লাগিলে বৃদ্ধি হয় । ক্রোটনে মুখের
লিঙ্গের ও অণ্ডকোষের একজিমার
অনেক সময় উপকার হয় ।
প্রস্রাবের পীড়ায়:-
প্রস্রাবের
বর্ণ ঘোরাল কমলালেবুর ন্যায় । রাত্রিকালে প্রস্রাবে
ফেনা থাকে । কিছুক্ষণ প্রস্রাব
ধরিয়া রাখিলে ঘোলাটে দেখায় এবং প্রস্রাবের উপর তৈলাক্ত পদার্থের কণাসমূহ ভাসিতে থাকে । দিনের বেলায়
প্রস্রাব হালকা রঙের তৎসহ সাদা তলানি । ।
কাশির লক্ষণ:-
কাশিতে
কাশিতে দম আটকাইবার ভাব
। মাথাটি বালিশে রাখিলেই আক্ষেপিক কাশি । তাড়াতাড়ি বালিশ
ছাড়িয়া উঠিয়া পড়ে এবং ঘরের মধ্যে পায়চারি করে অথবা চেয়ারে বসিয়া নিদ্রা যায় ।
বৃদ্ধি:-
গ্রীষ্মকালে
, ফল ও মিষ্টান্ত ভোজনে
, সামান্য পানাহারে , স্পর্শে , রাত্রে ও প্রাতে , ধৌত
কার্য করিলে । ।
উপশম:-
নিদ্রার পর।
পরবর্তী
ঔষধ:- রাসটক্স ।
ক্রিয়ানাশক:-
এন্টিম টার্ট
, এনাকার্ডি , ক্লিমেটিস , র্যানান - বালবো । '
অনুপূরক:-
রাসটক্স , এনাগেলিস , এনাকার্ডি , সিপিয়া ।
স্থিতিকাল
:- ৩০
দিন । ।
ব্যবহারের
শক্তি বা ক্রম:- ৬ হইতে
২০০ শক্তি ।
ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক:-
ফেনী হোমিওপ্যাথিক
মেডিকেল কলেজ
ও হাসপাতাল
।
যোগাযোগ:- ফরাজী হোমিও হল
সদর হসপাতাল মোড়, উত্তর বিরিঞ্চি রোড়-ফেনী।
0 মন্তব্যসমূহ