এই
ব্লগটি
শুধুমাত্র
নব্য
চিকিৎসক
এবং
শিক্ষার্থীদের
জন্য
প্রযোজ্য
।
Iodium – আয়োডিয়াম
প্রতিশব্দ
:
আয়োডিন, আয়োডাম,
আয়োডিনিয়াম।
উৎস
:
ধাতব পদার্থের
মতোই ইহা দিপ্তীমান, তীব্র গন্ধ ও তীব্র কটুস্বাদযুক্ত সমুদ্রের পানিতে উৎপন্ন সমুদ্র
ঘাসের ছাই হইতে সহজেই আয়োডিয়াম পাওয়া যায়।
প্রস্তুত : আয়োডাম – ১ ভাগ, ৯৯ ভাগ এলকোহলে মিশাইয়া
ইহার ২x শক্তি প্রস্তুত হয়।
প্রুভার :
ডাঃ হ্যানিমান
মায়াজম
:
এন্টি টিউবারকুলার,
এন্টি সাইকোটিক ও এন্টি সিফিলিটিক।
ক্রিয়াস্থান
:
গ্ল্যান্ড সমূহের
উপর, স্ত্রীলোকদের স্তন, ডিম্বাকোষ, শ্লৈম্মিক ঝিল্লি, অন্ত্রর ক্রিয়া প্রকাশ করে।
ধাতু
:
কাল কেশ ও কাল
চক্ষু বিশিষ্ট ব্যক্তির উপরই ইহার ক্রিয়া প্রকাশিত
হয়।
মানসিক
লক্ষণ :
১. রোগী অত্যন্ত
উৎকন্ঠিত, ব্যাকুল।
২. রোগী মানসিক
চাঞ্চল্য, রোগী সেজন্য ঘুরিয়া বেড়ায় তবুও যেন মনে শান্তি পায় না।
৩. স্থির হইয়া
থাকিলে মনের উৎকন্ঠা আরও বাড়িয়া যায় ও পাগলের মত হইয়া পড়ে।
৪. আত্নহত্যার
প্রবৃত্তি, দ্রব্যাদি ভাঙ্গিয়া ফেলার ও ছিড়িয়া ফেলার প্রবৃত্তি। আবার পরক্ষণে অন্য
খেয়ালে বশীভূত হয়।
৫. হঠাৎ স্মৃতি
বিভ্রম ঘটে।
৬. লোক সঙ্গ
চায় কিন্তু মানসিক উত্তেজনা ও উৎকন্ঠার জন্য সে তাহা ত্যাগ করে এমনকি চিকিৎসকের সান্নিধ্য
পর্যন্ত পছন্দ করে না।
চরিত্রগত
ও ধাতুগত লক্ষণ :
১. অত্যান্ত
ক্ষুধা এবং প্রচুর আহার সত্বেও শীর্ণতা। খাওয়ার পর রোগী শান্তি পায়। খাইলে শান্তি পায়
না খাইলে অশান্তি শুরু হয়।
২. দেহের শীর্ণতা,
রোগী, রোগী এত খায় তবুও শুকাইয়া যায়।
৩. স্থন দুইটি
শুকাইয়া ন্যাকড়ার মত হইয়া পড়ে।
৪. থাইরয়েড,
স্তন, যকৃত, ডিম্ভাধার, অন্ডকোষ, গ্রীবা, প্রষ্টেট গ্রন্থি বা গলা ফোলা, মুত্রাশয় ফুলিয়া
শক্ত হইয়া যায়।
৫. রোগী গরম
কাতর তবে সবসময় ঠান্ডা চায়। ঠান্ডা বাতাস, ঠান্ডা পানীয় প্রিয়।
৬. সামান্য
কারনে ঠান্ডা বা সর্দি লেগে যায়।
৭. অত্যান্ত
গরম পবণতা ও দুর্বলতা।
৮. স্নান করিতে
আগ্রহী, অনেক সময় ২/৩ বারও স্নান করে ।
৯. রোগী সামান্য
পরিশ্রমেই দুর্বল হইয়া পড়ে।
১০. সিঁডি দিয়া
উপরে উঠিতে গেলে মনে হয় দম বন্ধ হইয়া যাইবে।
১১. কুকুরের
ডাকের মত শব্দ হইয়া শুষ্ক কাশি।
১২. জরায়ু ক্যান্সার,
প্রতিবার মলত্যাগ কালে জরায়ু হইতে রক্ত বাহির হয়।
১৩. পেটের ভিতর
কাটা ছিঁড়ার মত বেদনা, তাহার সাথে কোমরে পিঠে ব্যথা।
১৪. শ্বেত প্রদর
স্রাব হলদে বর্ণের, যেখানে লাগে সেখানে হাজিয়া যায়।
প্রয়োগক্ষেত্র
:
শুষ্কতা ও শীর্ণতা,
উদরাময়, গন্ডমালা, গ্ল্যান্ডের স্ফীতি, লিভার, প্লীহা, যক্ষা রোগ, গুপিং কাশি, হৃৎপিন্ডের
পীড়া, ক্যান্সার, স্ত্রীপীড়া, সর্দিস্রাব, টনসিলাইটিস, বাত, ন্যাবা, কর্ণের পীড়া, লালাস্রাব,
ক্ষত।
শুষ্কতা
ও শীর্ণতা :
রোগীর রাক্ষুসে
ক্ষুধা এবং প্রচুর আহার সত্বেও শীর্ণতা ও শুষ্কতা। এই শুষ্কতাটি চলিতে চলিতে শেষ পর্যন্ত
রোগী একেবারে অস্থি চর্মসার হইয়া উঠে। স্ত্রীরোগী হইলে স্ননটি একেবারে শুকাইয়া যায়,
উহার অস্তিত্ব পর্যন্ত থাকে না এতই শুষ্কতা হয়। রোগী সর্বদাই ঠান্ডা ভালবাসে, গরমে
কষ্ট হয়।
গ্ল্যান্ডের
স্ফীতি :
দেহস্থ গ্ল্যান্ড
সমূহকে, বিশেষ করিয়া গলদেশের গ্ল্যান্ড সমূহকে কেন্দ্র করিয়া নানা প্রাকার বিশৃঙ্খলা
ও বিবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে শরীরটিকে শীর্ণ হইতে শীর্ণতার করিয়া ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে
নিয়ে যায়। গ্ল্যান্ডের স্ফীতি অতিশয় শক্ত, বেদনা শূন্য ও অত্যন্ত বড় হয়। ব্যথা একেবারেই
থাকেনা। স্তন ও অন্ডকোষ ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়া যেন শুকাইয়া যায়। মোট কথা ইহার গ্রন্থিসমূহের
যকৃত, ডিম্বাধার, অন্ডকোষদ্বয়, প্রন্থি বা গলা, মূত্রাশয় ফুলিয়া শক্ত হইয়া যায়।
উদরাময়
:
ম্যারাসমাস
রোগে রোগী যখন শীর্ণ হইয়া গিয়াছে অথবা নানা রোগে ভূগিয়া দুর্বল ও শীর্ণ হইয়া যায় তাহার
সঙ্গে উদরাময় হইলে। প্রায়ই এক সঙ্গে প্লীহার বৃদ্ধি থাকে, প্লীহা অত্যন্ত শক্ত এবং
হাত দিলেই তাহাতে বেদনা অনুভব করে, এই সময় লিভারও আক্রান্ত হয়। রোগীর সর্বদাই ক্ষুধা
এবং আহারের পর উপশম, এই লক্ষন প্রায়ই থাকে।
যক্ষারোগ
:
প্রথমে যাহারা
বেশ মোটা, পরে মধ্যে মধ্যে রক্ত উঠিয়া যাহারা শীর্ণ হইয়া গিয়াছে। যক্ষ্মাকাশিতে যখন
দেখা যায় কাশি অত্যন্ত শুষ্ক, গলা ও বুক ঘড় ঘড় করে, রোগী আদৌ গরমে থাকিতে পারেনা, কখনো
রক্ত মিশ্রিত, সিঁড়িতে উঠিতে কষ্টবোধ করে, তাহা হইলে আয়োডাম বিশেষ ফলদায়ক।
হুপিং
কাশি :
শ্বাস টানিতে
কষ্ট, থাকিয়া থাকিয়া হেঁচকা টানের মত করিয়া শ্বাস লয় এবং কাশি শুষ্ক নয়, কিন্তু কাশির
শব্দ ঘনঘনে ও অধিকাংশ সময়ে স্বর সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হইয়া যায়। গলা ও বুক সুড়সুড় করে
এবং কাশি হয়। কাশির সঙ্গে বুকে ফোটান ব্যথা ও জ্বালা। অনেক সময় গলার ভিতরে নিঃশ্বসের
কষ্টের জন্য শিশু নিজের গলা চাপিয়া ধরে। কাশির শব্দ কুকুরের গলার আওয়াজের মত, শুষ্ক
কাশি ।
ক্যান্সার
পীড়া :
ইউট্রাস থেকে প্রচুর পরিমানে ও বহুদিন স্থায়ী রক্তস্রাব।
প্রতিবার বাহ্যের সময় ইউট্রাস হইতে রক্তস্রাব ও সেই সঙ্গে প্রদর স্রাব। তবে ক্যান্সারে
স্থানিক লক্ষণের চেয়ে আয়োডিনের মানসিক লক্ষণ উৎকন্ঠা, ব্যাকুলতা, মানসিক চাঞ্চল্য প্রভৃতি
লক্ষণ এবং স্বাভাবিক ক্ষুধা এবং প্রচুর আহার সত্বেও শীর্ণতা গরম কাতরতা প্রভৃতি লক্ষণের
দিকে দৃষ্টি রাখিতে হইবে।
স্ত্রীপীড়া
:
যুবতীদের শীর্ণতা
ও দুর্বলতা এত বেশী হয় যে, রোগীনীর মাংস পেশী এমনকি স্তন পর্যন্ত শুকাইয়া যায় এবং রোগিনী
নিজেকে সদ্য প্রসূতির মত দুর্বল বোধ করে, মাথায় কাপড় দিতে পারেনা, তাহাতে গরম বোধ হয়,
গরমে বৃদ্ধি ও ঠান্ডায় উপশম হয়। পুরাতন শ্বেত প্রদাহ, স্রাব অত্যন্ত বেশী, এ স্রাব
হাজনশীল। যে কাপড়ে লাগে কাপড় ছিদ্র হইয়া যায় বা পুড়িয়া যাওয়ার ন্যায় দেখায়। জরায়ু ক্যান্সার
জরায়ু হইতে প্রচুর পরিমানে রক্তস্রাব হইতে থাকে। ডিম্ভাকোষ ছেট হইয়া গেলে যেমন আয়োডিয়াম
উপকারি তেমনি ডিম্ভাকোষ শোথ হইলেও উপকারি।
সর্দিস্রাব
:
নাসিকা দিয়া
তরল জলের মত গরম সর্দি ঝরে, তাহাতে নাকের বিতর বেদনা ঘায়ের মত হয়। চোখ দিয়া জল পড়া,
হাঁচি, রাত্রিতে নাক বুজিয়া যাওয়া, খোলা বাতাসে থাকিলে অত্যন্ত সর্দিঝরা, নাকের গোড়ায়
ও কপালে বেদনায় উপকারী।
বৃদ্ধি
:
ঠান্ডা পছন্দ
করিলেও ভিজা ঠান্ডায়, ঠান্ডা দুধ পানে, পূর্ণিমা ও অমাবস্যায়, পরিশ্রমে, উত্তাপে, স্পর্শ,
ঘর্ষণে।
হ্রাস
:
ঘুরিয়া বেড়াইলে,
আহারে, শীতল জলে স্নান করিলে, আহারান্তে।
অনুপুরক
:
ব্রোমিয়াম,
কেলি বাই, ক্লোরিন, হিপার, মার্কুরিয়াস।
সম্পুরক
:
লাইকোপেডিয়াম
পরবর্তী
:
কেলি বাই, আর্জ্জেন্ট
নাইট, লাইকো, ফসফোরস, প্লাম্বাম।
ক্রিয়ানাশক
:
ক্যাম্ফার,
গ্রাফাই, ফেরম, হিপার, ওপিয়াম, থুজা, সালফার, এন্টিম টার্ট, কফিয়া, চায়না, বেলেডোনা,
এপিস, আর্সেনিক।
ক্রিয়াস্থিতিকাল
:
৩০ হইতে ৪০
দিন।
ব্যবহার
ক্রম :
৬ হইতে ২০০।
আরও উচ্চতম শক্তি ভাল কজ করে থাকে ।
ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক:- ফেনী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ।
যোগাযোগ:- ফরাজী হোমিও হল
সদর হসপাতাল মোড়, উত্তর বিরিঞ্চি রোড়-ফেনী।
3 মন্তব্যসমূহ
চমৎকার হয়েছে স্যার।
উত্তরমুছুনমাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর হয়েছে
উত্তরমুছুনহাতের কব্জিতে ব্যথাহীন টিউমারে ব্যবহার্য কি?
উত্তরমুছুন