RhusTox - রাসটক্স। Dr. Mohi Uddin


এই ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

RhusTox  - রাসটক্স

প্রতিশব্দ :
আইভি বিষ, পয়জন ওক, ছাই বিষ, রাস রেডিকেন্স, মার্কারী ভাইন (পারদ দ্রাক্ষালতা)।
উৎস :
পয়জন ওক নামক গাছড়া হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়। এই গাছড়া ১ হইতে ৩ ফুট পর্যন্ত উঁচু হইয়া থাকে। পাতাগুলো পরিবর্তন শীল, সূঁচালো এবং নিচের ভাগ অবনত। জুন মাসে গাছে ছোট সবুজ ফুল দেখা যায়। টাটকা পাতা ঔষধে ব্যবহৃত হয়।
প্রাপ্তিস্থান :
যুক্তরাষ্ট্রের ঘন নিম্নভূমিতে জন্মিয়া থাকে।
আবিষ্কার :
ডাঃ হ্যানিমান ১৮১৬ সালে ইহা আবিষ্কার করেন।
প্রস্তুত প্রণালী :
পয়জন ওকের পাতার মন্ড তীব্র সুরাসার সহযোগে মূল অরিষ্ট প্রস্তুত হয়। ২x শক্তিতে ১ ভাগ অরিষ্ট ২ ভাগ পরিশ্রুত জল এবং ৭ ভাগ সুরাসার প্রয়োগ হয়। ৩x এবং উচ্চ শক্তিতে শুধুমাত্র পরিশ্রুত সুরাসার প্রয়োগ হয় ।
ক্রিয়াস্থান :
মাংসপেশী, চর্ম, মিউকাস মেমব্রেন, সন্ধিসমূহ, প্রন্থিমালা, স্নায়ুমন্ডলী, রক্তঞ্চালন মন্ডলী প্রভৃতি এই ঔষধের প্রধান ক্রিয়াস্থান।
ধাতুগত লক্ষণ :
বাত প্রবণ রোগী, উত্তপ্ত অবস্থায় জলে ভিজিলে, নদী বা পুকুরে স্নান করিলে অসুস্থ হইয়া পড়ে। শান্ত স্বভাবের ব্যক্তিগনের পীড়ায় এবং স্যাঁতস্যাঁত স্থানে বসবাস করিয়া পীড়া।
চারিত্রিক ও চরিত্রগত লক্ষণ :
১. রোগী উত্তপ্ত অবস্থায় অল্পক্ষন জনে ভিজিলে অথবা নদী ও পুকুরে স্নান করিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
২. শান্ত স্বভাবের ব্যক্তিগণের পীড়া, স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে বসবাস হেতু অসুস্থ হইয়া পড়ে।
৩. বাত ও সন্ধিবাত। ঝড়বৃষ্টির পূর্বে বেদনার বৃদ্ধি হয় এবং হাত প শক্ত হইয়া থাকে ।
৪. অত্যাধিক পরিশ্রমের পর জলে ভিজিয়া পীড়া।
৫. রোগী শরীর আবৃত  করিয়া রাখে অথচ হাত বাহির করিলেই কাশি আসে।
৬. পেশীতে ছিঁড়িয়া ফেলার মত বেদনা ।
৭. ক্ষুধা থাকে কিন্তু আহারের স্পৃহা থাকে না। মুখ গহ্বর ও গলায় অত্যান্ত শুষ্কতার সহিত প্রবল তৃষ্ণা। বিশেষত: রাত্রি কালে মুখ অত্যন্ত শুষ্কতার সহিত ঠান্ডা পানীয় পানের অদম্য তৃষ্ণা । কিন্তু ঠান্ডা পানীয়ে শীত ও কাশি দেখা দেয়।
৮. জিহ্বা খসখসে ও শুষ্ক। ধারগুলি লাল, ডগা লাল অথবা কাটা কাটা দেখায়।
৯. দিনে অস্থিরতা থাকে না, রাত্রে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, একভাবে শয়নে থাকিলে কষ্টানুভব।
১০. বাম অঙ্গের পেশীসমূহের বাত, বাম অঙ্গে সায়েটিকা বা এক প্রকার স্নায়ুশূল ও বাত।
১১. মাংস পেশীতে টাটান ব্যথা। আক্রান্ত স্থান খুলিলেই ক্ষতের মত ব্যথা বোধ।
১২. ঠোঁটের কোণে ঘা, মুখের ও ঠোঁটের চতুর্দিকে জ্বর ঠুটো।
১৩. মুখ, গলা, জিব সবই শুষ্ক, অত্যন্ত পিপাসা।
১৪. শরীরের স্থানে স্থানে আম বাতের মত ফোলা, তাহাতে চুলকানি।
১৫. লালাস্রাব, খাদ্যদ্রব্য তিক্তাস্বাদ, রুটি ও চিংডিমাছ খাওয়ার ইচ্ছা।
১৬. পুরাতন আমাশয় ও উদরাময়।
মানসিক লক্ষণ :
১. কোন কিছু প্রশ্ন করিলে দ্রুত উত্তর দেয়। উৎকন্ঠা ভাব ও ভয় বর্তমান থাকে।
২. রাত্রে প্রালাপ বেশী।
৩. মানসিক উত্তেজনা ও আত্নহত্যার চিন্তা। রোগী ডুবিয়া মরিতে চায় কিন্তু মৃত্যুবরণ করিবার সাহস হয় না। আত্নহত্যার ও সাহস হয় না।  
৪. অস্থিরতা ও অবিরত স্থানপরিবর্তন। রোগী খেয়ালী প্রকৃতি।
৫. উত্তাপে উপশম ও রাত্রে বৃদ্ধি।
৬. স্বপ্নে দেখে যেন পৃথিবী অগ্নিময় হয়েছে।
৭. শুনা কথা ও কুসংস্কারে বিশ্বাস করে।
  প্রয়োগক্ষেত্র :
সর্দিকাশি, আর্দ্র আবহাওয়ার জ্বর, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জা, গাত্র বেদনা, বাত, সন্ধিবাত, চক্ষুর পীড়া, উদরাময় ও আমাশয়, পক্ষাঘাত, যকৃতের পীড়া, বমন, কলেরা, দন্তশূল, কার্বংকল, ডিপথিরিয়া, স্ত্রী পীড়া, ক্ষত প্রভৃতি পীড়ায় ।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ও সবিরাম জ্বর :
বৃষ্টিতে ভিজিয়া বা স্যাঁস্যাঁতে স্থানে থাকিয়া জ্বর। জ্বর চুপ করিয়া থাকিলে বেদনার বৃদ্ধি এবং নড়াচড়ায় উপশম। বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টার মধ্য জ্বর আসে। দুপুর বেলা ব্যতীত সকল সময় প্রাতে ৬টা থেকে ১০টার মধ্যে জ্বর আসে। ৭টার দিকে জ্বর আসিলে তাহা সারা রাত থাকে।
জ্বর আসিবার পূর্বে শরীর বেদনা, হাত-পা কমড়ানি হাই তোলা, গা ভাঙ্গিয়া আসা, মুখ দিয়া লালা নিঃসারিত হওয়া, চোখ জ্বালা, শুষ্ক খকখকে কাশি।
শিতাবস্থা :
সারা শরীরে কম্পন, হাত পা ঠান্ডা হওয়া, শরীর বেদনা, গা বাঙ্গিয়া আসে, মুখমন্ডল রক্তিমাভ প্রভৃতি এই অবস্থায় বর্তমান থাকে। শীতের সময় ঘর্ম দেখা যায়। কোন কিছু পানাহারে শীতের বৃদ্ধি।
উত্তপাবস্থা :
ভয়ানক উত্তাপ, পিপাসা থাকে না। এই অবস্থায় শুষ্ক কাশি থাকে না। কিন্তু শরীরের এক প্রকার আমবাত বহির্গত হয়। রোগী অনবরত এপাশ ওপাশ করে। আমবাত চুলকানি থাকে।
শিরঃপীড়া :
শিরঃপীড়া অবস্থায় ইহার রোগী অনুভব করে শরীরের সমস্ত রক্ত যেন মাথায় উঠিতেছে। এই সময় কাণের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ করে। চলিবার সময় মাথা ঝাকি লাগিলে মনে হয় যেন মাথাটি ফাটিয়া যাইবে। মাথার ভিতর পিঁপড়া চলার অনুভূতি। শিরঃপীড়ার ফলে মুখমন্ডল আরক্তিম ভাব।
পক্ষাঘাত :
জলে ভিজিয়া বা স্যাঁতস্যাতে স্থানে বাস করিবার ফলে অথবা শারিরীক পরিশ্রম, প্রসব বা অতিরিক্ত রতিক্রিয়ার পর কিংবা ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড জ্বরের পরিণামে হাতে ও পায়ে পক্ষাঘাত হইলে। যে অঙ্গে পক্ষাঘাত হয় সে অঙ্গে ঝিঁঝিঁ ধরে। চোখের পাতায় পক্ষাঘাত হইলে ঝুলিয়া পড়ে।
চর্মপীড়া :
পর্মপীড়া বিশেষ করিয়া রসপূর্ণ বা রসশূন্য এই উভয় প্রকার উদ্ভেদই ইহার দ্বারা আরোগ্য হয়। মুখে একজিমা হইয়া যদি সেই সঙ্গে বেদনা, জ্বালা, চুলকানি ও ঝিনঝিনি থাকে। শিশুদের মাথায় একজিমা। সমস্ত দেহে আমবাত উদ্ভেদ স্থানে জ্বালা।
স্ত্রী পীড়া :
অতিরিক্ত বেগ বা কোঁথানির কারনে কোন ভারী দ্রব্য উত্তেলন কলিয়া জরায়ুর বাহির হয়ে যাওয়া। ঠান্ডা লাগিয়া বা জলে ভিজিয়া স্ত্রীলোকদের জরায়ু সম্পর্কিত যে কোন পীড়ায় ব্যবহারিত হয় । ঋতুস্রাবের রং ফিকে, হাজিয়া যায়, যোনীতে বেদনা।
কর্ণ পীড়া :
রাত্রে কানে দপদপানি ও ব্যথা হয়, মনে হয় কেহ কানের ভিতর জোরে ফুঁ দিতেছে বা কানের কাছে শিষ দিতেছে এবং শুইলে মনে হয় যেন কানের পর্দা ফাটিয়া যাইতেছে।
চক্ষুপীড়া :
কর্ণিয়ার উপর ও আশেপাশে ছোট ছোট মাংসের গ্যাঁজ বাহির হয, চোখের পাতা এক একবার আপনা আপনি বুজিয়া যায়, তখন জোর করিয়া পাতা  খুলিতে গেলে প্রচুর গরম অশ্রু বেগে বাহির হয়। চোখের যন্ত্রনা বাড়ে, চোখে আলো সহ্য হয় না। বাত ও আঘাতজনিত উপতারা প্রদাহে রাসটক্স বিশেষ ‍উপকার।
ডিপথিরিয়া পীড়া :
পীড়া শুরুতর হইয়া যখন গলার ভিতর হইতে রোগীর মুখ দিয়ে রক্ত মিশ্রিত লালা বাহির হইতে থাকে এবং সেই সঙ্গে ঘাড়ের আশেপাশের স্নায়ুগুলি প্রদাহিত হইয়া গাঢ় লাল হয়, তখন রাসটক্স উপকারি।
তুললীয় ঔষধ :
টাইয়েডে - আর্সেনিক, ফসফরাস, এসিড মিউর, ব্যাপটিসিয়া, ব্রায়োনিয়া।
বাত বেদনায় – সালফার, আর্সেনিক, রুটা, লিডম, পালসেটিলা, লাইকোপোডিয়াম, কলচিকাম, বেলেডোনা, স্পাইজেলিয়া।
নিষিদ্ধ ঔষধ :
রাসটক্সের পূর্বে ও পরে এপিস ব্যবহার করিবেনা।
উৎকৃষ্ট :
রাসটক্সের পরে ফসফরাস ভাল কাজ করে।
অনুপুরক :
ব্রায়োনিয়া, ক্যালকেরিয়া কার্ব, আর্সেনিক, আর্ণিকা, বেলেডোনা।
ক্রিয়াস্থিতিকাল :
১ হইতে ৭ দিন।
ব্যবহার শক্তি :
৩ হইতে ১০০০শক্তি। সাধারণত ৩০ শক্তিই অধিক ফলদায়ক।



ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক:- ফেনী হোমিও প্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
যোগাযোগ:- ফরাজী হোমিও হল
সদর হসপাতাল মোড়, উত্তর বিরিঞ্চি রোড়-ফেনী
মোবাইল:- ০১৮১৪-৩১৯০৩৩

https://www.youtube.com/watch?v=Pg7YbLX2Ovc
 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ

  1. অনেক ধন্যবাদ ভাই আমি চাই আপনি সমস্ত ওষুধ গুলি লেখেন

    উত্তরমুছুন
  2. এই নিবন্ধে আপনি , লিঙ্গ সংক্রমণের লক্ষণসমূহ, লিঙ্গ ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার, লিঙ্গ ব্যথার কারণগুলি, লিঙ্গ ব্যথার চিকিত্সা पूरा पढ़े

    উত্তরমুছুন
  3. , এজমার ওষুধ কি এটা ব্যবহার করা যাবে

    উত্তরমুছুন
  4. ধন্যবাদ। সুন্দর লেখার জন্য।

    উত্তরমুছুন
  5. রাসটক্স ওষুধ টি কোথায় পাওয়া যাবে???

    উত্তরমুছুন
Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)