ইগ্নেশিয়া এমেরা
Ignatia
প্রাকৃতিক অবস্থা:- লোগানিয়াসিয়া।
প্রতিশব্দ:- ইগ্নেশিয়া, ফাবা-ইণ্ডিকা, ফাবা-সেঙ্কটি ইগনাশি, ইগনেশিয়ানা ফিলিফাইনিকা, পাসাকোরিয়া লংগিফ্লোরা, স্টিকনস ইগনাশি, সেন্ট ইগনেশাস বিন।
উৎস ও বর্ণনা:- ইগ্নেশিয়া ফিলিফাইনিকা নামক গাছড়া হইতে এই ঔষধটি প্রস্তুত হয়। ইহা লতা জাতীয় বৃহৎ গাছড়া, যাহার শাখাগুলি সোজা থাকে। লম্বা শাখাগুলি কাণ্ডযুক্ত, বৃত্তযুক্ত, পত্রসমূহ ডিম্বাকৃতি, উল্টানো এবং পাঁচ হইতে সাত ইঞ্চি লম্বা হয়। ফুলগুলি সাদা, লম্বা ছোট আকারের প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের হইয়া থাকে। ফুলগুলিতে জুঁই ফুলের গন্ধের ন্যায় এক প্রকার সুগন্ধ পাওয়া যায়। নাশপাতি আকৃতি বিশিষ্ট ফলে ১৮ হইতে ২৪টি বীজ তিক্ত শাঁসের মধ্যে নিহিত থাকে। বীজগুলি প্রায় ১ ইঞ্চি লম্বা, ডিম্বাকৃতি, স্ফীতোদর এবং পার্শ্ব চ্যাপ্টা হয়। ফলসহ সমুদয় গাছড়াটি ঔষধে ব্যবহৃত হয়।
প্রাপ্তিস্থান:- কোচিন, চীন এবং ফিলিফাইন দীপপুঞ্জে এই গাছগুলি পাওয়া যায়।
প্রুভার:- ডাঃ হ্যানিমান ইহা প্রুভ করেন।
প্রস্তুত প্রণালী:- ফলসহ সমগ্র গাছড়াটি হইতে সুরাসার সহযোগে মূল অরিষ্ট প্রস্তুত হয়। ২০ এবং উচ্চ শক্তি পরিশ্রুত সুরাসারের সহিত প্রয়োগ হয়। বিচূর্ণাকারেও ঔষধটি প্রস্তুত হয়।
প্রস্তুতের ফরমূলা:- উত্তর: এফ-৪ (তরল)। এফ-৭ (বিচূর্ণ)।
ক্রিয়াস্থান:- মস্তিষ্ক ও স্নায়ুমণ্ডলীর উপর ইগ্নেশিয়ার প্রধান ক্রিয়া। তবে গলদেশ, গ্ল্যান্ড ও পরিপাকতন্ত্রের উপরও ইহা ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া থাকে। স্নায়ুমণ্ডলী বিশেষ করিয়া পৃষ্ঠমজ্জার উপর ক্রিয়া করিয়া ধনুষ্টঙ্কারের মত আক্ষেপ, মূর্ছা, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি লক্ষণ উৎপন্ন করে। ইহার ক্রিয়া দ্বারা শরীরের সকল ইন্দ্রিয়ের অনুভব শক্তি বৃদ্ধি পায় ও মানসিক জনিত শোক দুঃখের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায়।
ধাতুপ্রকৃতি:- মৃদু ও স্নায়বিক প্রকৃতি, সহজে উত্তেজনাশীল, পরিবর্তনশীল, দ্রুত অনুভব ও তাড়াতাড়ি কার্য সম্পাদন করা লক্ষনযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষে এবং পিত্ত প্রধান স্ত্রীলোকদের পক্ষে ইগ্নেশিয়া বিশেষ কার্যকরী।
মানসিক লক্ষণ:-
১। রোগীর মন অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। এইমাত্র আহলাদিত, পরক্ষণেই বিষাদিত, কখনও বা ছেলেমানুষী করে।
২। মনের দুঃখ কষ্ট কাহাকে বলে না নীরবে সহ্য করে ও দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে।
৩। অত্যন্ত বিমর্ষ, দুঃখিত ও শোকপূর্ণ।
৪। নির্জনে থাকিয়া একাকী দুঃখভোগ করিতে ইচ্ছা করে।
৫। প্রেমে নিরাশ হেতু মানসিক কষ্ট ও পীড়া।
৬। দুঃখে সান্তনা বা সমবেদনা জানাইতে গেলে রোগী ক্রুদ্ধ বা বিরক্ত হইয়া উঠে।
চরিত্রগত লক্ষণ:-
১। শোক, দুঃখ, ক্রোধ বা ব্যর্থ প্রেম মনে পোষণ করা হেতু পীড়া।
২। বার বার দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
৩। অত্যন্ত মাথা ব্যথা, মনে হয় যেন কেহ মাথায় এক পার্শ্ব দিয়া একটি পেরেক ঢুকাইয়া দিতেছে। যে দিকে এই প্রকার ব্যথা, সেই দিকে চাপিয়া শুইলে মাথা ব্যথার উপশম।
৪। তামাকের ধোঁয়া ও নস্য সহ্য হয় না। তাহাতে মাথা ধরে ও মাথা ব্যথা বাড়ে।
৫। পেট খালি খালি বোধ।
৬। সবিরাম জ্বরে-শীতাবস্থায় উত্তাপ প্রয়োগে রোগী আরাম বোধ করে।
৭। শুধুমাত্র শীতাবস্থায় পিপাসা। উত্তাপ বা অন্য কোনও অবস্থার পিপাসার লেশমাত্র থাকে না।
৮। একই সময়ে জ্বরে আক্রমণ।
৯। শিশুদেরকে শাসন করিবার পর ফিট, তড়কা প্রভৃতি।
১০। টনসিল ফোলে ও পাকে।
অদ্ভুত লক্ষণ:- রোগী গঠনে পুরুষ কিন্তু স্বভাবে স্ত্রী। ভরপুর আহারের পরেও পেট যেন খালি, সঙ্গীতের শব্দে কানে সোঁ সোঁ, গুন গুন শব্দ শ্রুত হয়। চলাপেরায় দন্ত শূল বেদনার উপশম, ভ্রমণে অর্শের যন্ত্রণার কমে, ধ্বজভঙ্গে প্রবল বমনেচ্ছা, জ্বরে শীতাবস্থায় শীতল জলপান, উত্তাপে পিপাসাহীন, কাশিলে কাশির বৃদ্ধি প্রভৃতি কয়েকটি অদ্ভুত লক্ষণ ইগ্নেশিয়া নির্বাচনের অন্যতম উপায়।
প্রয়োগক্ষেত্র:- শোক ও দুঃখ ভোগ হেতু পীড়া, হিষ্টিরিয়া, গলনালীর পীড়া, শিরঃপীড়া, কটি স্নায়ুশূল বেদনা, হিক্কা, সবিরাম জ্বর, মলদ্বারের পীড়া, অর্শ, কৃমি, উদরাময়, কাশি, স্ত্রীপীড়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইগ্নেশিয়া ব্যবহৃত হয়।
শোক ও দুঃখ:- স্নায়বিক পীড়ায় যে সকল ঔষধ ব্যবহৃত হইয়া থাকে তাহাদের মধ্যে ইগ্নেশিয়া অন্যতম। শোক, দুঃখ বা মনকষ্ট ভোগ করিয়া, ভালবাসায় নিরাশ হইয়া এবং বিষয় সম্পত্তি নষ্ট হইয়া সর্বস্বান্ত হইয়া যে সমস্ত মানসিক লক্ষণ ও স্নায়বিক বিকার প্রকাশ পায় তাহাতে ইগ্নেশিয়া উত্তম ঔষধ। শোক দুঃখ ও ভালবাসায় নিরাশ হইয়া রোগোৎপত্তি লক্ষণে এসিড ফসও উপযোগী। পার্থক্য এই যে, শোক দুঃখ জনিত তরুণ পীড়ায় ইগ্নেশিয়া এবং পুরাতন ও অনেকদিন স্থায়ী শোক ও দুঃখ ভোগের মন্দ ফলে উৎপন্ন পীড়ায় এসিড ফস অধিকতর উপযোগী।
সব সময় শোক ও দুঃখের বিষয় আলোচনা ও ক্রন্দন করা, ক্ষুধাহীনতা ও মাথা ভাঁর প্রকাশ পায়। রোগী নিরবে শোক সম্বরণ করে। তাহার মনের দুঃখ কষ্ট কাহারও নিকট বলিতে চায় না। হৃদয়ে পোষণ করে ও আপন মনেই ভোগ করে। যে সকল স্নায়ু মেরুদণ্ডের মধ্য হইতে বহির্গত হইয়া শরীরের অপরাপর স্থানে বিশেষতঃ মাংস পেশীতে গিয়াছে তথায় ইগ্নেশিয়া সুন্দর কার্য করে। শিশু ও বালকগণ ভীত হইয়া অথবা তিরস্কৃত বা শানিত হইয়া কিংবা অন্য কোন কারণে প্রবল চিত্ত বিকার হেতু যে সমস্ত আক্ষেপিক পীড়া উৎপন্ন হয় তথায় ইগ্নেশিয়া উত্তম ঔষধ। শোক দুঃখজনিত স্ত্রীলোকদের প্রসবের পর সূতিকা আক্ষেপ অর্থাৎ ফিট হইলেও ইহা কার্যকরী।
প্রফুল্লতা ও বিমর্ষতা:- ইগ্নেশিয়ার রোগীর মন অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। শোক দুঃখ ও মনোকষ্ট ভোগ করিয়া ভালবাসায় নিরাশ হইয়া বা বিষয় সম্পত্তি নষ্ট হইয়া সর্বস্বান্ত হইয়া স্নায়বিক বিকার প্রকাশ পায়। রোগী নিরবে শোক সংবরণ করে, মনের দুঃখ কাহারো নিকট বলিতে চায় না, হৃদয়ে পোষণ করে ও আপন মনেই ভোগ করে। সে কারণে বিমর্ষতা, আবার পরিবর্তনশীল মন বিধায় হঠাৎ আহলাদিত হইয়া উঠে, কিন্তু এই আমনন্দময় অবস্থা বেশীক্ষণ থাকে না আবার বিমর্ষ, দুঃখিত ও শোকপূর্ণ। তাই এই পর্যায়ক্রমে প্রফুল্লতা ও বিমর্ষতা যেখানে দেখা যাইবে সেখানে ইগ্নেশিয়াই প্রধান ঔষধ।
জ্বর লক্ষণ:- সাধারণতঃ দ্বিপ্রহরে জ্বর আসে। জ্বরের সময় চুলকানি, সমস্ত শরীরে আমবাত। সবিরাম প্রকৃতির জ্বর। বহুদিন যাবত কুইনাইন সেবনজনিত পুরাতন জ্বর। ইহার জ্বরে প্রধানতঃ চারিটি প্রয়োগ প্রদর্শক লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায়।
ক) বাহ্যিক উত্তাপ প্রয়োগে পীড়ার উপশম।
খ) শরীর বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত করিলে, উত্তাপ অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
ঘ) শীতের সময় মুখমণ্ডল লালবর্ণ। শীতাবস্থায়-উত্তাপে আরামবোধ কিন্তু
উত্তাপাবস্থায়-উত্তাপ আদৌ সহ্য হয় না। ঘর্মাবস্থায় রোগী অতিশয় দুর্বল ও অবসন্ন হইয়া পড়ে। বিজুরাবস্থায় রোগীর ওষ্ঠে এবং দুই ওষ্ঠের মধ্যে জর ঠুটো দেখা দেয়।
বাতের লক্ষণ:- কটি স্নায়ুশূল বেদনায় অতিশয় বেদনা যন্ত্রণা। বেদনা সবিরাম জাতীয় এক ঘন্টার 'বেশী থাকে না। রাত্রিতে ও শীতকালে উহার বৃদ্ধি ঘটে। বেদনা আরম্ভহইবার পূর্বে শীত, পিপাসা ও কম্প হয়। বেদনায় রোগী অস্থির হইয়া ঘরের মধ্যে পায়চারি করে। বাতে মন হয় আঘাত লাগার ফলে মাংস দেহের হাড় হইতে পৃথক হইয়া গিয়াছে। সামান্য যন্ত্রণা অনেক বেশী বলিয়া অনুভূত হয়।
হিষ্টিরিয়ায়:- ইগ্নেশিয়ার হিষ্টিরিয়ায় রোগীর মন পরিবর্তনশীল, শোক চাপিয়া যদি পীড়া হয় এবং সেই সঙ্গে ফিটের সময় পর্যায়ক্রমে হাসি কান্না এবং পাকস্থলী হইতে কি যেন উঠিয়া গলায় দিয়া পুটলি পাকাইয়া থাকে এই লক্ষণটি থাকে তাহা হইলে ইগ্নেশিয়া উপকারী। ঢোঁক গিলিলে মনে হয় যেন নামিয়া গেল কিন্তু আবার ঠেলা মারিয়া উঠিয়া অতিশয় কষ্ট দেয়। ইহা গ্লোবাস হিষ্টিরিয়া নামে পরিচিত। শোক, দুঃখ, ভয়জনিত তরুণ পীড়ায় ইহা ব্যবহৃত হয়। রোগীর কথায় কেহ বাধা দিয়া বা প্রতিরোধ করিলে অমনি অভিমানে ফিট হয়। অথবা দুঃখিত হইয়া কাঁদিয়া ফেলে। এইরূপ নীরবে যাহারা শোক দুঃখ সহ্য করে তাহাদের শরীর ক্রমশঃ দুর্বল হইয়া পরে হিষ্টিরিয়া হয়। ইগ্নেশিয়ার হিষ্টিরিয়ায় পেশীর স্পন্দন আছে, বুক ধড়ফড় করে। সর্বদাই পেটে খালি ভাব অনুভব করে। ফিটের প্রকাশাবস্থায় রোগী শীত শীত অনুভব করে, ছটফট করে। চক্ষুর সামনে যেন আঁকাবাঁকা কি চলিয়া বেড়ায়। মুখ লালবর্ণ ও আঙ্গুল মুঠা হয়। হিষ্টিরিয়ার সহিত পেশীর স্পন্দন থাকিলে ইগ্নেশিয়া, জিঙ্কাম, এগারিকাস এবং মন আহলাদিত আবার পরক্ষণেই বিষাদিত লক্ষণে ইগ্নেশিয়া, প্লাটিনা, নাক্স মস্কেটা প্রভৃতি উপযোগী।
গলনালীর পীড়া:- ইগ্নেশিয়ায় ঢোঁক গিলিলে গলার 'বেদনা ও যন্ত্রণা উপশমিত হয়। টনসিলাইটিস, গলক্ষত, ডিপথিরিয়া রোগে গ্লোবাস হিষ্টিরিয়া লক্ষণ বর্তমান থাকিলে ইগ্নেশিয়ায় তাহা আরোগ্য হয়। মনে হয় পাকস্থলী হইতে কি যেন উঠিয়া গলায় দিয়া পুঁটলি পাকাইয়া জমিয়া থাকে এবং তাহাতে গলাবন্ধ হইয়া যায়। তরল পদার্থ গিলিলে গলায় আটকায় ও যন্ত্রণা বৃদ্ধি, কঠিন পদার্থ খাইলে যন্ত্রণার হ্রাস এই নির্বাচক লক্ষণ বর্তমান থাকে। ইগ্নেশিয়ায় গলার মাছের কাঁটা ফুটিয়া থাকিবার মত মনে হয় অথচ উহা মাছের কাঁটা নহে। সেজন্য বার বার ঢোঁক গিলে।
শিরঃপীড়া:- আধ কপালে মাথা ব্যথা। মাথার কোনও এক অংশে তীক্ষ্ণ বেদনা মনে হয় যেন কেহ ধারাল অস্ত্র বা পেরেক ফুটাইয়া দিতেছে। অন্য এক ধরণের শিরঃপীড়া যাহা কথা বলিলে, কোনও বিষয়ে মনোসংযোগ করিলে বা গল্পাদি শুনিলে বৃদ্ধি হয়। মাথা ভারী হয়, সম্মুখে নত হইলে সামান্য উপশম হয়। হিষ্টিরিয়াগ্রস্তা স্ত্রীলোকদের আধ কপালে মাথা ধরা ও যাহারা শোকে দুঃখে প্রপীড়িত হইয়া স্বাস্থ্য নষ্ট করিয়াছে তাহাদের পক্ষে ইহা উপকারী। যে দিকে ব্যথা সেইদিকে চাপিয়া শুইলে সামান্য আরাম বোধ। বেশ ক্ষুধা হয় ও খায়, আহারের পর মাথা ব্যথা অনেক কমিয়া যায়।
মলদ্বারের পীড়ায় বা সরলান্ত্রের পীড়ায় (অর্শপীড়া):- সরলান্ত্রেও ইগ্নেশিয়ার বিশিষ্ট লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায়। বার বার পায়খানার ইচ্ছা অথচ পায়খানায় বসিলে পায়খানা না হইয়া শুধুমাত্র সরলাস্ত্র বাহির হইয়া পড়ে। রোগী সরলাস্ত্র বাহির হইয়া পড়িবার নিমিত্ত কোঁথ দিতে ভয় পায়। কোনও ভারী জিনিস নিচু হইয়া তুলিতে ভয় পায়। পাছে তাহার সরলাস্ত্র বাহির হইয়া পড়ে। বাহ্যের পর কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত মল দ্বারে টাটানি ব্যথা থাকে। সাধারণতঃ অর্শে এই লক্ষণটি থাকে। ইগ্নেশিয়ায় কোন পীড়া না থাকিয়াও তরল বাহ্যের সঙ্গে মলদ্বার বাহির হওয়া লক্ষণটি থাকে।
কাশি:- রাত্রিতে শুইলে কাশি বেশ বৃদ্ধি পায়। রোগী যতই কাশে, গলার সুড়সুড়ানি ও কাশির বৃদ্ধি হয়, নিবৃত্তি হয় না। শেষে প্রাণপণ চেষ্টায় কাশি চাপিয়া রাখিবার চেষ্টা করে। গলা সুড়সুড় করিয়া আক্ষেপিক কাশি, এই ধরণের কাশি স্নায়বিক বা জরায়ু ডিম্বকোষ প্রভৃতির কোনও পীড়া অথবা কৃমি জন্য হইয়া থাকে। রোগী মনে করে তাহার গলায় পালকের মত কি লাগিয়া আছে।
স্ত্রী রোগ:- ইগ্নেশিয়ার রক্তস্রাব অকালে প্রকাশ পায়। ১০/১৫ দিন পর পর স্রাব দেখা দেয়। রক্তের বর্ণ কাল ও চাপ চাপ। রোগী আলোক সহ্য করিতে পারে না। মাথা ভারবোধ, উত্তপ্ত ও বেদনাযুক্ত। মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। রোগিনী বিমর্ষ, দুঃখিত ও শোকপূর্ণ। জরায়ুতে সংকোচন মত বেদনা। ঐ বেদনা চাপে কমে। জরায়ুর মধ্যে খালি বোধ। বাধক বেদনা, জরায়ুর মধ্যে সংকোচন হইয়া প্রবল বেদনা। হিষ্টিরিয়ায় রোগিনীর জরায়ু সংক্রান্ত পীড়া। গর্ভাবস্থায় মূর্ছা এবং মূর্ছার মধ্যে রোগিনী হাত পা চালে।
বৃদ্ধি:- প্রাতে, মুক্ত বাতাসে, আহারান্তে, কফি পানে, ধুমপানে, তামাকের গন্ধে, তরল পদার্থ পানে, বাহ্যিক উত্তাপে, তীব্র গন্ধে, শোকে, শীতে, মানসিক চাঞ্চল্যে।
উপশম:- কঠিন দ্রব্য ভক্ষণে, উত্তাপে, প্রবল চাপে, চলিয়া বেড়াইলে।
পরবর্তী ঔষধ:- রাস, পালস, লাইকো, সালফ, সিপিয়া, আর্স, বেল, ক্যালকে, চায়না।
অনুপূরক:- নেট্রাম মিউর, পালসেটিলা, সিপিয়া, চায়না, সালফার।
ক্রিয়ানাশক:- পালস, ক্যামো, ককু, এসে এসি, আর্ণি, ক্যাক্ষর।
ক্রিয়াস্থিতিকাল:- ৯দিন।
ব্যবহারের শক্তি বা ক্রম:- ৬ হইতে ২০০ শক্তি।'
0 মন্তব্যসমূহ