শিশু মোবাইল আসক্তি
এটা এখন অনেক বাবা-মায়েরই একটা কমন চিন্তা: "আমার বাচ্চা মোবাইল ছাড়া খেতে চায় না!
এটা শুধু খাওয়ার সমস্যা নয়—এটা শিশুদের মনো-আচরণগত (behavioral) একটা সমস্যা হয়ে উঠছে। মোবাইল আসক্তির প্রভাবে শিশুরা খাওয়া, ঘুম, খেলা, এবং মনোযোগ সবকিছুতেই সমস্যা দেখায়।
কেন শিশুরা মোবাইল ছাড়া খেতে চায় না?
-
অভ্যাস হয়ে গেছে: প্রতিদিন মোবাইল দিয়ে খাওয়ালে, তারা ধরে নেয় এটা খাওয়ার অংশ।
-
ধৈর্য কমে যায়: মোবাইল না পেলে অধৈর্য বা রাগ দেখায়।
-
বিনোদনের অভাব: খাওয়ার সময় মনোযোগ ধরে রাখার মতো অন্যকিছু থাকে না।
-
অভিভাবকের ব্যস্ততা: অনেক সময় কাজের মাঝে মোবাইল দিয়ে খাওয়ানো হয়, যা শিশুরা দ্রুত শিখে ফেলে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা: (নির্দিষ্ট লক্ষণভিত্তিক)
1. Cina:
-
শিশু জেদি, খেতে চায় না
-
মনোযোগ মোবাইল বা বাইরের কিছুতে
-
পেটের সমস্যা বা কৃমির লক্ষণ থাকলে
2. Chamomilla:
-
অতিরিক্ত রাগি, কেঁদে-কেটে জেদ করে
-
মোবাইল না দিলে চিৎকার
-
দাঁতের সময় হলে আরও বেশি সমস্যা করে
3. Tuberculinum:
-
যেসব শিশু খুব একটিভ, সবকিছুতে বিরক্ত হয়
-
নতুন নতুন জিনিস ছাড়া থাকে না, একঘেয়েমি পছন্দ করে না
-
খেতে চায় না, সবকিছুতেই "না"
4. Calcarea Phosphorica:
-
শিশু দুর্বল, খাওয়া কম করে, মোবাইল ছাড়া খায় না
-
শরীর বেড়ে উঠছে না ঠিকমতো
-
পড়ে থেকে মোবাইল দেখে খায়
5. Baryta Carbonica:
-
মানসিক ও শারীরিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে থাকলে
-
নতুন জিনিসে আকৃষ্ট হয়, মোবাইল ছাড়তে চায় না
-
মা-বাবার প্রতি বেশি নির্ভরশীল
বাসায় কী করবেন?
(হোমিওপ্যাথির পাশাপাশি)
✅ খাওয়ার সময় নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন
✅ খাবার রঙিন ও আকর্ষণীয় করে সাজান
✅ খেলনার প্লেট বা চামচ ব্যবহার করুন
✅ খাওয়ার সময় গল্প বলুন বা গান করুন (মোবাইল ছাড়া)
✅ ধৈর্য ধরুন—প্রথমে কিছুটা কষ্ট হবে, পরে ফল পাবেন
তবে শিশুর স্বভাব ও উপসর্গ অনুযায়ী ওষুধ নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ নেওয়া উচিত।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রেও রুগীর উচিত একজন যোগ্য ও অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। কারণ:
ব্যক্তিভেদে রোগ ভিন্ন হতে পারে: হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগ নয়, রুগীর সামগ্রিক লক্ষণ, মানসিক অবস্থা, শারীরিক গঠন, জীবনধারা সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ঔষধ নির্বাচন করা হয়।
সঠিক ঔষধ নির্বাচন জরুরি: একই রোগের জন্য একাধিক হোমিও ঔষধ থাকতে পারে, কিন্তু কোনটি রুগীর উপযোগী তা নির্ধারণ করতে একজন বিশেষজ্ঞের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
মাত্রা ও সময়জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ: কখন, কী পরিমাণে, কতদিন ঔষধ খেতে হবে—তা ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী হওয়া উচিত।
নিজে নিজে ঔষধ গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে: ভুল ঔষধ বা মাত্রা রুগীর সমস্যাকে জটিল করে তুলতে পারে, কিংবা উপসর্গ লুকিয়ে রেখে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তাই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাও অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।
0 মন্তব্যসমূহ