ক্যান্সার Cancer
ক্যান্সার (Cancer)
কী?
ক্যান্সার
হলো এমন একটি রোগ যেখানে শরীরের কোনো কোষ (Cell) নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়তে
থাকে, আশেপাশের টিস্যু নষ্ট করে এবং রক্ত/লিম্ফের মাধ্যমে
শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়—এটাকেই মেটাস্টেসিস
(Metastasis) বলে।
এটি সাধারণ
কিছু রোগের মতো নয়—
কোষের জিনগত
পরিবর্তন → ক্যান্সারের মূল কারণ।
ক্যান্সার
কত প্রকার?
ক্যান্সার
সাধারণত ৫ ভাগে ভাগ করা হয়—
১) Carcinoma
- শরীরের ত্বক বা অঙ্গের আস্তরণ কোষে
- সবচেয়ে বেশি দেখা যায়
উদাহরণ: Breast cancer, Lung cancer, Colon cancer
২) Sarcoma
- পেশি, হাড়, চর্বি,
রক্তনালী, স্নায়ু
টিস্যুর ক্যান্সার
৩) Leukemia
- রক্ত ও হাড়ের মজ্জার ক্যান্সার
৪) Lymphoma
- লিম্ফ নোড ও ইমিউন সিস্টেমের ক্যান্সার
৫) Myeloma
- অস্থিমজ্জার প্লাজমা কোষের ক্যান্সার
এ ছাড়া আরও
আছে—
👉
Brain Tumor
👉
Thyroid cancer
👉
Skin cancer
👉
Cervical cancer
👉
Prostate cancer
👉
Ovarian cancer
👉
Stomach cancer
👉
Liver cancer ইত্যাদি।
ক্যান্সার
হওয়ার কারণ (Cancer Causes)
ক্যান্সার
সাধারণত একটি কারণে হয় না, বরং
অনেকগুলো ঝুঁকি ফ্যাক্টর মিলিয়ে হয়:
১) জিনগত
কারণ (Genetic mutation)
- পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস
- জন্মগত জিনের পরিবর্তন
২) পরিবেশগত
কারণ
- দূষণ
- তেজস্ক্রিয়তা (Radiation)
৩)
জীবনযাপনের কারণ
- ধূমপান, গুটখা, সুপারি
- মদ্যপান
- ভাজা–চর্বিযুক্ত খাবার
- কম ব্যায়াম
- স্থূলতা
৪) সংক্রমণ
- HPV → জরায়ুমুখের ক্যান্সার
- Hepatitis B/C → লিভার ক্যান্সার
- H. pylori → পাকস্থলীর ক্যান্সার
৫) হরমোনাল
পরিবর্তন
- ইস্ট্রোজেন/প্রোজেস্টেরন ভারসাম্যহীনতা
- থাইরয়েড সমস্যা
৬) মানসিক
চাপ
- দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা → শরীরের ইমিউন দুর্বল হয়ে পড়ে।
ক্যান্সারের
প্রতিকার / চিকিৎসা (Treatment)
আধুনিক
চিকিৎসায় চারটি প্রধান থেরাপি ব্যবহৃত হয়:
১) সার্জারি
(Operation)
- টিউমার কেটে ফেলে দেওয়া
২)
কেমোথেরাপি
- ওষুধ দিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা
৩)
রেডিওথেরাপি
- রশ্মি দিয়ে টিউমার সঙ্কুচিত বা ধ্বংস করা
৪)
ইমিউনোথেরাপি / হরমোন থেরাপি
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যান্সারের
বিরুদ্ধে লড়াই করা
এগুলো ক্যান্সারের মূল চিকিৎসা — প্রমাণিত ও কার্যকর।
কিছু
ব্যবহৃত রেমেডির উদাহরণ (রোগের ধরন অনুযায়ী)
Conium –
স্তন/গ্রন্থির
টিউমারে
Carcinosin – ক্যান্সার পরিবারে ইতিহাসে
Hydrastis – পাকস্থলী/কোলন ক্যান্সারে সহায়তা
Phytolacca – গ্রন্থির শক্ত টিউমারে
Arsenicum Album – দুর্বলতা, ভয়, উদ্বেগে
Lachesis – বাম দিকে ক্যান্সার, রক্তনালীর জটিলতা
Ruta / Kali phos / Ferrum phos – ব্যথা–দুর্বলতা
কোনো রেমেডি
রোগ অনুযায়ী নয় — ব্যক্তি অনুযায়ী ঠিক করতে হয়।
ক্যান্সার
প্রতিরোধকারী খাবার (Anti-Cancer Diet)
১) সবুজ শাকসবজি
- পালং শাক
- লালশাক, করলা
- ব্রকলি, বাঁধাকপি
Sulforaphane থাকে → ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমায়।
২) ফলমূল
টমেটো
- এতে Lycopene
থাকে → বিশেষ করে প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।
বেরি জাতীয়
ফল
- ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি,
আঙ্গুর
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরা, ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে সহায়তা করে।
আপেল
- ফাইবার বেশি → কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৩) হলুদ
হলুদের Curcumin
ক্যান্সার
কোষের DNA ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে।
৪) রসুন ও পেঁয়াজ
- রসুনে Allicin
পেট ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
৫) বাদাম ও বীজ
- কাজুবাদাম
- আখরোট
- চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স
সিড (Omega-3)
কোষের প্রদাহ কমায়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৬) ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার
- মাছ (ইলিশ, সার্ডিন,
টুনা)
- ফ্ল্যাক্স সিড
ইমিউনকে শক্ত করে, ক্যান্সার কোষের ছড়িয়ে পড়া ঠেকায়।
৭) গ্রিন টি
- এতে EGCG থাকে
শক্তিশালী অ্যান্টি-ক্যান্সার যৌগ।
৮) ডাল, ছোলা, মসুর
- উচ্চ ফাইবার
কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে শক্তিশালী খাবার।
৯) দই / প্রোবায়োটিক খাদ্য
অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ভালো থাকে → ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
১০) অলিভ অয়েল
ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
যে
খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে (Cancer Risk Foods)
ভাজা-পোড়া
প্রসেসড
মাংস (সসেজ, সালামি)
অতিরিক্ত
লাল মাংস
মদ/ধূমপান
সফট ড্রিংক
চিনিযুক্ত
খাবার
অতিরিক্ত
লবণ
বেশি পোড়া
খাবার (barbecue, burnt meat)
পানি পান
দিনে ২–২.৫ লিটার পানি
টক্সিন বের
হয়, কিডনি/লিভার
ভালো থাকে।
একটি
পরিপূর্ণ Anti-Cancer Day Diet (উদাহরণ)
সকাল:
- গ্রিন টি
- ওট/ডালিয়া + ফল
- ৫–৬ টি বাদাম
দুপুর:
- ১ থালা ভাত বা রুটি
- শাক ১ বাটি
- মাছ/ডাল
- সালাদ (টমেটো, গাজর)
বিকাল:
- ফল (আপেল/আঙ্গুর)
- লেবুর পানি
রাত:
- ভাত/রুটি কম
- সবজি বেশি
- দই
ক্যান্সারের জন্য ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনসমূহ
১)
Carcinosin
- ক্যন্সার প্রবণ শরীর
- দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ
- পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে
- ক্লান্তি, ঘুম না হওয়া
২)
Conium Maculatum
- স্তন ক্যান্সার
- প্রোস্টেট ক্যান্সার
- শক্ত গাঁট/টিউমার
- ধীরে ধীরে বড় হয়, চাপ দিলে ব্যথা
৩)
Phytolacca
- স্তনে ব্যথাযুক্ত গাঁট
- নডিউলার সিস্ট
- ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণে
৪)
Thuja Occidentalis
- ওভারি, ইউটেরাস টিউমার
- শরীরে ওয়ার্ট/সিস্ট
- হরমোনাল বৃদ্ধি
৫)
Hydrastis Canadensis
- পেটের ক্যান্সার
- লিভার স্টোমাক ইস্যু
- হজম সমস্যা, কাশির সাথে দুর্বলতা
৬)
Arsenicum Album
- রক্তাল্পতা
- দ্রুত ঘাম
- শরীর শুকিয়ে যাওয়া
- চিন্তা, ভয় বেশি
৭)
Calcarea Fluorica
- শক্ত, স্টোনের মতো টিউমার
- ফাইব্রয়েড
- সিস্টিক টিউমার
৮)
Silicea
- পুরনো টিউমার,
ফোঁড়া
- ইনফেকশন হতে থাকা সিস্ট
- শরীর থেকে টক্সিন বের হতে সাহায্য করে
৯)
Ipecac / Cadmium Sulph
- কেমো বা রেডিয়েশনে বমি
- প্রচণ্ড দুর্বলতা
১০)
Scirrhinum
- কঠিন, শক্ত ক্যান্সারাস গাঁট
- ব্রেস্ট বা ইউটেরাস টিউমারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত
১১)
Lycopodium
- পেটের ক্যান্সার
- গ্যাস, ফোলাভাব
- আত্মবিশ্বাস কম, ভয় বেশি
১২)
Arnica + Phosphorus
- কেমো/রেডিয়েশনের পরে রক্তপাত
- দুর্বলতা
- শরীর ক্ষয় হওয়া
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা
- ওষুধ কখনোই নিজে নিজে খাবেন না।
- ক্যান্সারের ধরন (ব্রেস্ট, ইউটেরাস,
লিভার, প্রোস্টেট,
ব্লাড), রিপোর্ট ও লক্ষণ না দেখে ওষুধ নির্বাচন করা ঠিক নয়।
- ভুল ওষুধে রোগ আরও ছড়িয়ে যেতে পারে।
** গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ: **
·
কোনো ওষুধ নিজে নিজে সেবন করবে না
·
ফারাজী হোমিও হল ফেনী।
·
০১৮১৪৩১৯০৩৩
·
হোমিওপ্যাথিতে স্বস্তি ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা।
0 মন্তব্যসমূহ