এই ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষাথীদের
জন্য প্রযোজ্য।
Magnesia Phosphoricum - ম্যাগনেশিয়া ফসফোরিকাম
সাধারণ নাম : ফসফেট অব ম্যাগনেশিয়া।
অপর নাম : ম্যাগনেশিয়া ফসফোরিকাম।
সংক্ষিপ্ত নাম : ম্যাগ ফস
(M.P)
রাসায়নিক সংকেত : Mg HPO4,
7H20।
রাসায়নিক গুন : ইহা ফসফেট অফ সোডার সংগে সালফেট ম্যাগনেশিয়া সংমিশ্রন করে প্রস্তুত করতে হয়।
দানাগুলো ষষ্ঠ কোন যুক্ত এবং সূঁচের মত।
ইহা ঠান্ডা এবং খেতে
মিষ্টি স্বাদ। জলে মিশ্রিত হয়, জলে ইহা কিছুটা গলে যায় এবং উত্তাপে জমাট বাধে।
পস্তুতি : হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়ার
বিধিশুদ্ধ রীতি অনুসারে দুগ্ধ শর্করা সহযোগে ইহার বিচুর্ণ বিচুর্ণ প্রস্তুত করাতে হয়।
ইহার সংক্ষিপ্ত নাম ম্যাগফস।
ধাতু : এন্টিসাইকোটিক।
প্রয়োগ ক্ষেত্র : হঠাৎ পীড়া উপস্থিত হয় এবং রোগী অত্যন্ত অবসন্ন
হইয়া পড়ে। মূত্রনালীর আক্ষেপ, আক্ষেপিক প্রস্রাব বন্ধ, দন্তোদগকালীন আক্ষেপ, স্নায়বিক
কাশি, অন্ত্র ও পাকস্থলীর শূল, মেনিনজাইটিস, স্নায়ুশূল, গুহ্যদ্বার নির্গমন, বিদ্যালয়ে
ছাত্র-ছাত্রিদের শিরঃপীড়া, সায়েটিকা।
ক্রিয়াস্থান : স্নায়ুকোষ,
পেশী, মেরুমজ্জা, অস্থি, মস্তিষ্ক, রক্তকণিকাদির রস, সংযোজক তন্ত্র, পাকস্থলীর পেশী।
মানসিক লক্ষণ :
১. রোগী মনসিক পরিশ্রম করিতে অনিচ্ছুক এবং মানসিক পরিশ্রমে
তাহার শক্তিও থাকে না।
২. মন অবসন্ন, পড়া-লেখা করিতে অনিচ্ছা। আবার পড়িতে-লেখিতে
গেলে নিদ্রিত হইয়া পড়ে।
৩. রোগী বেশী কথা বলে আবার চুপচাপ বসিয়াও থাকিতে পারে।
৪. বেদনার জন্য সর্বদাই দুঃখ প্রকাশ করে ক্রন্দন করে।
৫. বুদ্ধি ও মনোবৃত্তির গোলযোগ।
৬. দুঃখের কথা মনে
করিয়া দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করে, হাই উঠে।
চরিত্রগত লক্ষণ :
১. বেদনার জন্য সর্বদাই দুঃখ প্রকাশ করে এবং ক্রন্দন করে।
দুঃখের জন্য দীর্ঘ নিশ্বাসও ত্যাগ করে ।
২. বেদনা আক্ষেপিক অথবা স্নায়বিক। উদরে শূল বেদনা কীক্ষন
ছুরিবিদ্ব। স্থান পরিবর্তনশীল ।
৩. অত্যন্ত যন্ত্রনা দায়ক শিরঃপীড়া।
৪. চক্ষুর স্নায়ুশূল এবং আক্ষেপিক স্পন্দন।
৫. পাকস্থলীর আক্ষেপিক বেদনাবশতঃ বমন। সামনের দিকে ঝুঁকিলে
উপশম এবং শীতলতায় বৃদ্ধি হয়।
৬. হিক্ক।
৭. লেখক ও পিয়নদের আঙ্গুলের আক্ষেপ।
৮. মূত্রশয়, প্রস্রাবকালীন কুন্থন, জ্বালা এবং মূত্ররোধ।
৯. কষ্টরজঃ পীড়ায় বেদনা, ঋতুস্রাবসহ অসহ্য বেদনা, স্রাব ।আরম্ভ
হইলেই বেদনার উপশম।
১০. হাঁপানি, যক্ষা
সর্বপ্রকার কাশি আক্ষেপিক ধরনের। শুষ্ক কাশি, শয়নে কাশির বৃদ্ধি।
মন : রোগীর মানসিক গোলযোগের
জন্য সব কাজে অনিহা। রোগী সর্বদাই বেদনায় এবং আক্ষেপের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে, কাঁদে,
দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে। কোন প্রকার মানসিক কাজ করিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে ।দৃষ্টি শক্তির
অভাব, বুদ্ধিহিনতা, দুঃখ প্রকাশ পায়। চোখ দিয়ে জল পড়ে। কখনো চুপ করে থাকিতে পারে না
আবার কখনো কখনো বেশ চুপ চাপ করে বসে থাকে। জিনিসপত্র এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় নিয়ে
যায়। তার মানসিক ও দৈহিক ভারসাম্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
মস্তক এবং মস্তিষ্ক : শিরপীড়া, অতিশয় যন্ত্রনাযুক্ত শির ব্যথা। মাথার যন্ত্রনা হঠাৎ বিদ্যুতের মত আরম্ভ হয় এবং মাথার পেছন
বা ঘাড় হতে শুরু করে চোখ ও মস্তক পর্যন্ত ছডিয়ে পড়ে। সন্ধ্যার সময় মাথার যন্ত্রনা কিছুটা
কম থাকে। মাথা ব্যথার সময় রোগীর মুখমন্ডল লাল দেখায়। বমি বমি ভাব হয়। সর্বশরীলে ব্যথা
অনুভব হয় ।মানসিক পরিশ্রমের পর মাথা ঘোরে। বাতজনিত শির পীড়া। মাথায় খুসকী ও দাদ।
চোখ : চোখের তারকা সংকোচন।
সবসময় চোখ দুটি আপনা আপনি খোলে আর বন্ধ হয়। টেরা দৃষ্টি, চোখের স্নায়বিক বেদনা উহা
গরমে উপশম। চোখের পাতা কম্পন ও স্পন্দন। রোগী আলো দেখিতে পারেনা। চোখের সামনে নানা
বর্ণ দেখিতে পায়, বিদ্যুৎ ঝিলিকের মত ও রংধনুর মত দেখে। চোখের সামনে কখনো কখনেো কালো কালো দাগ যেন ভাসছে।
চোখের পাতায় চুলকানি, কয়েক পাতা পড়লে (পাঠ) করলে চোখ বন্ধ হয়ে আসে। চোখের পাতায় যেন
বোঝা চাপানো আছে মনে হয়।
কান : কানে সর্বদাই বেদনা
বোধ এবং আক্ষেপ। উত্তাপে উপশম বোধ। ডান কানের পেছনে স্নায়ুশূল। ঠান্ডা জলে মুখ, গলা,
ঘাড় ধুলে বা শীতল বাতাসে গেলে যন্ত্রনা বাড়ে।
মুথমন্ডল : মুখে স্নায়ুশূল।
শীতল জলে বা ঠান্ডা লাগাইলে ইহা বৃদ্ধি পায়। কপালে ব্যথা, স্পর্শ করিলে বদেনা বোধ।
চোয়ালে আক্ষেপিক বেদনা এবং যন্ত্রনা। মুখের ডান দিকে স্নায়ুশূল, চোখের নিচ থেকে দাঁত
পর্যন্ত আসে।
জিহ্বা : জিহ্বায় জ্বালা পোড়া,
চুলকানি এবং ক্ষত। খাবার সময় বেশ কষ্ট অনুভব করে। জিহ্বার ক্ষতের জন্য রোগী কোন কিছু
খেতে ভয় পায়।
দাঁত : ঠান্ডা লাগিলেই ঠান্ডা
জল ছোয়ালেই দাঁতের যন্ত্রনা বাড়ে। ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুতে পারে না কারণ দাঁতে ভীষন
যন্ত্রনা হয়। বিছানায় শয়ন করিলে যন্ত্রনা বাড়ে। দন্ত ক্ষয়, দাঁতের যন্ত্রনা স্থান পরিবর্তন
করে।
গলার অভ্যন্তর : আহার বা পান
করার সময় বা কোন কিছু গিলিবার সময় আক্ষেপ। গলা যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বায়ু নাড়ীর আক্ষেপ
বা তড়কার সময় গলা বন্ধ হয়ে যাওয়া। গলার ডান পাশে যেন ক্ষত আছে বলে মনে হয়। পুরাতন টনসিল
বৃদ্ধি।
পরিপাক যন্ত্র : এসিড বা টক
খেলে পাকস্থলীর যন্ত্রনা বৃদ্ধি। কফি খেতে চায়না, চিনি খেতে চায়। দিন রাত হিক্কা। প্রচন্ড
পেট ব্যথা। পেটে হাত দিলে বা শিতলজল দিলে বেদনার বৃদ্ধি। সর্বদাই বমি বমি ভাব। হিক্কার
সংঙ্গে পিত্ত, পেটে বয়ানক ব্যথা।
মল : জলের মত পাতলা মল
যুক্ত উদরাময় তৎসহ বমি এবং পেটে ভয়ংকর যন্ত্রনা। পায়ের গোড়ালিতে কামড়ানি ব্যথা। জলের মত পাতলা
মল পিচকারীর ন্যায় নির্গত হয়। কলেরার লক্ষণ, হাত পায়ে আক্ষেপ, উদরে আক্ষেপিক বেদনা।
পায়খানার জন্য মলদ্বারে বেদনা বোধ। উদরের পেশীতে ভয়ংকর বেদনা বোধ। শিশুদের কোষ্টকাঠিন্য
তৎসহ পেটে বেদনা।
পেটে বায়ু জম্নে ও জ্বালা যন্ত্রনা করে।
মূত্র যন্ত্র : যখন দাঁড়িয়ে
থাকে বা হাটতে থাকে তখন প্রস্রাবের বেগ হয়। মূত্রস্থলীর বেদনা। শিশুরা প্রচুর পরিমানে
মুত্র ত্যাগ করে। প্রস্রাবের সময় বেদনা বার বার মূত্র ত্যাগের ইচ্ছা, তাহার সাথে সহবাসের
ইচ্ছাও বৃদ্ধি পায়। মূত্র পাথরী পাথরী নির্গমন কালে ভয়ানক যন্ত্রনা বোধ, ব্যাথায় ছটপট
করে।
পুঃজননইন্দ্রিয় : প্রষ্টেট
গ্রন্থি বৃদ্ধি। বার বার প্রস্রাব করলেও মনে হয় আবার করলে ভাল হয়। মূত্রনালীর ধারণ
ক্ষমতা কমে যায়। প্রস্রাব করার আগে ও পরে যন্ত্রনা অনুভব হয়।
স্ত্রী জননইন্দ্রিয় : ঋতু শূল, ডানদিকের বেদনা বেশি হয়। উত্তাপে হ্রাস, স্রাবের আগেই বেদনা আরম্ভ,
থেমে থেমে বেদনা। ডিম্বাশয়ে স্নায়ু শূল, ডানদিকেই বেশী ।ঋতু স্রাবের রক্ত কালো ও চাকা
চাকা এবং ঘন ঘন ঋতু হয়। অনিয়মিত ঋতু, যোনি আক্ষেপ, বধক বেদনা। সহবাসে যাতনা, কোমর পিঠ
ও ডিম্ভাশয় বেদনা অনুভব ।
ঘুম : ভাল ঘুম হয় না। কষ্টের স্বপ্ন দেখে। মস্তকের পেছনে, ঘাড়ে, পৃষ্ঠদেশে
বেদনা অনুভব তাই ঘুমাতে পারে না। দুর্বলতা এবং মস্তকের শূন্য শূন্য মনে হয়।
জ্বর : সবিরাম জ্বর, সন্ধিস্থানে
এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভব হয়। জ্বরে কম্প সহ পৃষ্ঠের উপরে নীচে শীত উঠানামা
করে ।শীতভাবের পরেই দম বন্ধ হবার মত। জ্বর আসার আগে হাই ওঠে। সন্ধ্যায় বা রাত্রি সাতটার
পর, আহারের পর শীত শীত ভাব, জ্বর কালে শরীর বেদনা ও যন্ত্রনা। মাংস পেশীর সংকোচ ভাব।
ত্বক : ত্বকের যে সব স্থানে
প্রদাহ হয় অথবা কড়া পড়ে সেখানে ভয়ংকর বেদনা যন্ত্রনা। চুলকানি না থাকলেও দেহের সর্বত্র
চুলকায়। স্নায়বিক চুলকানি, বাহিরে কোন রকম চুলকানি দেখা যায় না। দাড়ি কামানোর পর চুলকানি
হয়।
টিসু : আক্ষেপ, বেদনা, আক্ষেপিক
শ্বাসকষ্ট, স্নায়বিক শ্বাসকষ্ট। জ্বর বিহীন তড়কা। আংগুলের সংকোচন, চোখ দুটি ঘোলা থাকে।
এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। হাঁ করার পর অনেক সময় হাঁ আর বুজতে পারে না।
হ্রাস ও বৃদ্ধি : ঠান্ডায় শীতল
বাতাসে, ঠান্ডা জলে মুখ ধৌত করলে ঘর্ষন করলে উপশম বোধ হয়। মুক্ত বাতাসে ভ্রমন করলে
শির পীড়া কমে।
ডাঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক :- ফেনী হোমিওপ্যাথিক
মেডিকেল কলেজ।
যোগাযোগ
:- ফরাজী হোমিও হল।
সদর হাসপাতাল, উত্তর বিরিঞ্চি রোড় – ফেনী
মোবাইল : ০১৮১৪- ৩১ ৯০ ৩২
1 মন্তব্যসমূহ
আমাশয় রোগীর খাবার তালিকা
উত্তরমুছুন