সেক্সের উপকারিতা সমূহ কি কি?
সেক্স শুধু আনন্দ ও মানসিক ঘনিষ্ঠতার জন্যই নয়, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। নিচে এর প্রধান উপকারিতা দেওয়া হলোঃ
মানসিক উপকারিতা
- স্ট্রেস কমায় – সেক্সের
সময় এন্ডোরফিন ও অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা
দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমায়।
- ঘুম ভালো হয় – যৌনসুখের
পরে শরীর শিথিল হয় এবং হরমোন পরিবর্তনের কারণে গভীর ঘুম আসে।
- সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় – দাম্পত্য সম্পর্কে ভালোবাসা, বিশ্বাস ও মানসিক বন্ধন দৃঢ় হয়।
- মুড উন্নত করে – বিষণ্নতা বা খিটখিটে মেজাজ কমাতে সাহায্য করে।
শারীরিক উপকারিতা
- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে – নিয়মিত যৌনসঙ্গম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় – সেক্সের সময় হার্ট রেট বাড়ে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়।
- ব্যথা কমায় – এন্ডোরফিন
নিঃসরণ মাথাব্যথা, পিরিয়ডের ব্যথা বা শরীরের টান কমাতে সাহায্য করে।
- শরীরের ফিটনেস – সেক্স
একটি প্রাকৃতিক ব্যায়ামের মতো কাজ করে, ক্যালরি
পোড়ায় ও পেশি সচল রাখে।
- হরমোন ব্যালান্স করে – পুরুষদের টেস্টোস্টেরন ও মহিলাদের ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্য রক্ষা করে।
অন্যান্য উপকারিতা
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় – রক্ত সঞ্চালন বাড়ার ফলে।
- প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি – পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর গুণগত মান ভালো হয়,
মহিলাদের ক্ষেত্রে পেলভিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
- আয়ু বৃদ্ধি – গবেষণায়
দেখা গেছে নিয়মিত যৌনজীবন সুস্থ দীর্ঘায়ুর সহায়ক হতে পারে।
তবে মনে রাখতে হবে,
সেক্সের এই
উপকারিতা তখনই পাওয়া যাবে যখন এটি হবে নিরাপদ,
সম্মতিপূর্ণ
ও সঠিক সম্পর্কের মধ্যে।
কোন বয়সে কোন উপকারিতা
সবচেয়ে বেশি হয়
বয়সভেদে সেক্সের উপকারিতায় কিছু পার্থক্য দেখা যায়। কারণ শরীরের হরমোন, শক্তি ও মানসিক চাহিদা বয়স অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। নিচে ভাগ করে দিলামঃ
২০–৩০ বছর বয়স
- প্রজনন ক্ষমতা সর্বোচ্চ থাকে → পুরুষদের শুক্রাণু ও মহিলাদের ডিম্বাণুর গুণগত মান
ভালো থাকে।
- হরমোন ব্যালান্স → নিয়মিত
সেক্স টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেনকে স্বাভাবিক রাখে।
- শরীর ফিট থাকে → ক্যালরি
পোড়ানো, পেশি টোন করা ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
- আত্মবিশ্বাস বাড়ে → মানসিকভাবে সুখী ও আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।
৩০–৪০ বছর বয়স
- স্ট্রেস কমানো → চাকরি,
সংসার, সন্তান – নানা চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- ঘুম ভালো হয় → অক্সিটোসিন
নিঃসরণের কারণে।
- ত্বক ও সৌন্দর্যে প্রভাব → রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, হরমোন
ব্যালান্স রাখে, ফলে ত্বক উজ্জ্বল থাকে।
- পেলভিক স্বাস্থ্যের উন্নতি → মহিলাদের পেলভিক মাসল শক্ত হয়, পুরুষদের প্রোস্টেট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৪০–৫০ বছর বয়স
- হরমোন পরিবর্তন সামলাতে সাহায্য করে → পুরুষদের টেস্টোস্টেরন কিছুটা কমতে শুরু করে,
মহিলাদের মেনোপজ-পূর্ব হরমোন পরিবর্তন দেখা যায়।
সেক্স এগুলো ব্যালান্স রাখতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় → রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হৃদপিণ্ড
সক্রিয় রাখে।
- জয়েন্ট ও পেশির ফ্লেক্সিবিলিটি → ব্যায়ামের মতো কাজ করে।
- মানসিক বন্ধন দৃঢ় হয় → দাম্পত্য সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখে।
৫০ বছরের পর
- মেনোপজ/অ্যান্ড্রোপজ-এর উপকার → হট-ফ্ল্যাশ, অনিদ্রা,
মুড সুইং ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে।
- অস্থি ও পেশির শক্তি বজায় রাখে → রক্ত সঞ্চালন ও হরমোনের কারণে।
- ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সহায়ক → গবেষণায় দেখা গেছে মানসিক ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা
মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখে।
- একাকীত্ব দূর করে → মানসিক
শান্তি ও সুখ দেয়।
- আয়ু বৃদ্ধি → নিয়মিত
সুস্থ যৌনজীবন দীর্ঘায়ুর সহায়ক হতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়,
- তরুণ বয়সে (২০–৩০) সেক্স মূলত প্রজনন ও ফিটনেসের জন্য বেশি উপকারী।
- মধ্য বয়সে (৩০–৫০) এটি স্ট্রেস কমানো, সম্পর্ক
দৃঢ় করা ও হৃদযন্ত্র রক্ষায় বেশি ভূমিকা রাখে।
- বয়স বেশি হলে (৫০+) এটি মানসিক শান্তি, হরমোন
ব্যালান্স ও দীর্ঘায়ুর জন্য বেশি কার্যকরী।
পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা
করে উপকারিতার তালিকা:-
এখন আমি পুরুষ ও মহিলাদের জন্য বয়সভেদে সেক্সের বিশেষ উপকারিতা আলাদা করে তুলে ধরছি—
পুরুষদের জন্য সেক্সের
উপকারিতা:-
২০–৩০ বছর
- শুক্রাণুর গুণমান ও সংখ্যা ভালো থাকে।
- টেস্টোস্টেরন স্বাভাবিক মাত্রায় বজায় থাকে।
- স্ট্যামিনা ও পেশির শক্তি বাড়ায়।
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
৩০–৪০ বছর
- কাজ ও সংসারের স্ট্রেস কমায়।
- প্রোস্টেট গ্রন্থি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- যৌন অক্ষমতা (ইরেকশন সমস্যা) প্রতিরোধে সহায়ক।
- ঘুম ভালো হয়।
৪০–৫০ বছর
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- টেস্টোস্টেরন হ্রাসের প্রভাব কিছুটা সামাল দিতে
সাহায্য করে।
- শরীরের ফ্যাট কমাতে ও মাংসপেশি সচল রাখতে সহায়ক।
- মানসিক শান্তি ও দাম্পত্য সম্পর্ক দৃঢ় করে।
৫০ বছরের পর
- প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক।
- মানসিক প্রশান্তি ও একাকীত্ব দূর করে।
- হাড় ও জয়েন্ট সচল রাখতে সাহায্য করে।
- দীর্ঘায়ুতে সহায়ক হতে পারে।
মহিলাদের জন্য সেক্সের
উপকারিতা:-
২০–৩০ বছর
- প্রজনন ক্ষমতা সুস্থ থাকে।
- মাসিক চক্র নিয়মিত হতে সাহায্য করে।
- ত্বক উজ্জ্বল করে, চুল ও
সৌন্দর্য উন্নত করে।
- পেলভিক ফ্লোর মাসল শক্ত করে।
৩০–৪০ বছর
- গর্ভধারণ পরবর্তী সময়ে পেলভিক মাংসপেশি টোন করতে
সাহায্য করে।
- সাদা স্রাব বা হরমোনজনিত সমস্যায় ভারসাম্য রাখে।
- ঘুম ভালো হয় ও মানসিক চাপ কমায়।
- আত্মবিশ্বাস ও নারীত্বের অনুভূতি বাড়ায়।
৪০–৫০ বছর
- মেনোপজ-পূর্ব হরমোনের পরিবর্তন (হট ফ্ল্যাশ,
রাগ, মাথাব্যথা) সামলাতে সহায়ক।
- অস্থি ও হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যে উপকার করে।
- যোনির শুষ্কতা কমায়, যৌনাঙ্গে
রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
- মানসিক ঘনিষ্ঠতা ও দাম্পত্য সম্পর্ক দৃঢ় রাখে।
৫০ বছরের পর
- মেনোপজ-পরবর্তী যোনি শুষ্কতা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য
করে।
- হাড়ের ক্ষয় (অস্টিওপোরোসিস) প্রতিরোধে হরমোন
ব্যালান্স রাখে।
- স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে সহায়ক।
- মানসিক প্রশান্তি ও একাকীত্ব দূর করে।
সংক্ষেপে:
- পুরুষদের ক্ষেত্রে সেক্স টেস্টোস্টেরন, প্রোস্টেট
স্বাস্থ্য ও হার্ট রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।
- মহিলাদের ক্ষেত্রে সেক্স হরমোন ব্যালান্স, পেলভিক
স্বাস্থ্য ও মেনোপজ সমস্যা কমাতে কার্যকর।
তথ্য:-
ওয়েব সাইড ও ভিবিন্ন লেখকের বই থেকে পাওয়া।
1 মন্তব্যসমূহ
গুরুপ্ত পূর্ণ তর্ত্থ
উত্তরমুছুন