এই ব্লগটি শুধুমাত্র নব্য চিকিৎসক এবং শিক্ষাথীদের
জন্য প্রযোজ্য।
Cantharis
– ক্যান্থারিস
প্রতিশব্দ : স্পেনিশ ফ্লাই, ব্লিষ্টার ফ্লাই, ক্যান্থারিডস।
উৎস : ব্লিষ্টার
ফ্লাই নামক এক প্রকার গোবরের পোকা হইতে ইহার উস। ইহা সবুজ বর্ণের পোকা ১ থেকে ২ ইঞ্চি
লম্বা এবং ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি পুরু হইয়া থাকে। এই পোকা ছাই, লাইলাম জাতীয় সুগন্ধি ফুলের
গাছ এবং অন্যান্য গাছ খাইয়া থাকে।
প্রাপ্তিস্থান : মধ্য ও দক্ষিন ইউরোপ এবং দক্ষিন পশ্চিম এশিয়ায় এই পোকা
পাওয়া যায়।
প্রস্তুত প্রনালী : শুকানো গোবরের পোকা,
ফুটান্ত ভিনিগারে সিদ্ধ করার পর শুকানো হয় এবং পরে চূর্ণে পরিনত করা হয়। উত্ত চূর্ণ
শর্করার সাহায্য বিচূর্ণাকারে প্রস্তুত হয়। প্রথমে ২x প্রস্তুত হয়।
প্রুভার : ডাঃ হ্যানিম্যান ইহা প্রুভ করেন।
ক্রিয়াস্থান : মূত্রযন্ত্র, জননেন্দ্রিয়, চর্মের, শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী ও
রক্ত সঞ্চালন ক্রিয়া প্রভৃতির উপর ক্রিয়া করিয়া থাকে।
মানসিক লক্ষণ :
১. প্রচন্ড প্রলাপ ক্রন্দন এবং উচ্চ
কন্ঠে চীৎকার করে, উম্মদনা যৌন সংক্রান্ত ব্যাপারে।
২. রোগীর কাম ভাব বেশী।
৩. পাগলের ন্যায় ব্যবহার করে, ক্রোধে
উহার পরিসমাপ্তি হয়।
৪. ভীতি ও ভ্রান্ত ধারণায় পূর্ণ। হৎঠা সংজ্ঞাহীন
হয়।
চারিত্রগত লক্ষণ :
১. কামোত্তেজনা, কাম ভাব চরিতার্থ করার
ইচ্ছা।
২. আগুনে পোড়া হেতু জ্বালা, গলা, বুক,
পাকস্থলী, ডিম্বাকোষ, প্রস্রাব দ্বার প্রভৃতিতে ঠিক পুড়িয়া যাওয়ার মত জ্বালা।
৩. পানাহার এমনকি তামাকে পর্যন্ত বিরক্তি।
৪. প্রস্রাবের পূর্বে সময়ে ও পরে প্রচন্ড
জ্বালা। প্রস্রাবে কোঁথানি ও বেগ।
৫. সর্বদা প্রস্রাব ত্যাগের ইচ্ছা,
ফোঁটা ফোঁটা করিয়া প্রস্রাব নির্গত হয়।
৬. নাক, মুখ, অন্ত্র, প্রসাব দ্বার
দিয়া রক্ত নির্গমন, রক্ত প্রসাব।
৭. পানের পিকের ন্যায় লালবর্ণ বাহ্য
।
৮. চর্মে ফোস্কার ন্যায় উদ্ভেদ – উহা
পাকে ও ঘা হয়।
প্রয়োগ ক্ষেত্র :
প্রমেহ ও প্রস্রাব যন্ত্রের পীড়া
পুনঃ পুনঃ প্রস্রাবের বেগ, ফোঁটা ফোঁটা
রক্ত মিশ্রিত সামান্য প্রস্রাব, প্রস্রাবের পূর্বে সময়ে ও পরে প্রচন্ড বেগ দিতে হয়।
মূত্রথলীতে যন্ত্রনা, প্রবল কামেচ্ছা প্রভৃতি থাকিলে ক্যান্থারিস উপকার হইবে।
কামোচ্ছাস
সুস্থ শরীরে সেবন করিলে ক্যান্থারিস
স্ত্রী পুরুষ উভয়েরই উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সেই উত্তেজনা হেতু রতি ক্রিয়ার এত ইচ্ছা
হয় যে, নিদ্রা যাইতে পারে না। কাহারো এই রতি ক্রিয়ার কারনে স্বাস্থ্য ভঙ্গ হইয়া থাকিলে
উপকার হবে।
পোড়া ঘা
আগুনে পুড়িয়া গেলে ক্যান্থারিস মহৌষধ।
ফোস্কা পড়িবার পূর্বে প্রয়োগ করিলে জ্বালা যন্ত্রনা সত্বর দূর হইয়া যায় ও ফোস্কা পড়েনা।
যদি ফোস্কা পড়ে গা গয় তা হলে বাহ্যিক প্রয়োগে তাহার উপসম হয়।
স্ত্রী পীড়া
স্ত্রীলোকদের প্রবল সঙ্গমেচ্ছা। ঋতু
অতি শীঘ্র আরম্ভ হয়। স্রাব অত্যধিক, যোনী কপাটে কৃষ্ণবর্ণ স্ফীতি, তৎসহ উত্তেজনা।ডিম্ভাকোষে
জ্বালাকর যন্ত্রনা সূঁচ ফোটান ব্যথা প্রদাহ। প্রসবের পর বা গর্ভস্রাব হওয়ার পর ফুল
সম্পূর্ণরৃপে নির্গত না হইয়া যদি তাহার বিছূ অংশ আটকাইয়া থাকে তাহা হইলে প্রয়োগে ফুল
নিষ্কাষিত হইয়া যায়।
মূত্র পাথরী
প্রস্রাবে অত্যন্ত জ্বালা-পোড়া, বেগ,
কুন্থন ইত্যাদি লক্ষন থাকিলে উপকার হইবে।
রক্তআমাশয় ও উদারময়
পেটে যেন ছুরি দিয়া কাটিতেছে এইরুপ
তীব্র বেদনা হইলে, ছোট ছোট মাংসের টুকরার মত পদার্থসহ আম ও রক্ত মিশ্রিত মল নিঃসরণ
হইলে। বাহ্যের সময় মলদ্বারে আগুনে পোড়ার মত জ্বালা ও কোঁথানি। ইহার উদরাময় অপেক্ষা
আমাশয়ে কোঁথানি ও বেগ বেশী। পেটে কামড়ানি ব্যথা থাকে। মলদ্বারের জ্বালা সহিত গলায়,
মুখে ও ঠোঁটে জ্বালা এবং অদম্য পিপাসা থাকে, হাত পা ঠান্ডা হইয়া যায়।
ক্যান্থারিস ও ক্লিমেটিসের পার্থক্য :
ক্যান্থারিস :
বারবার মূত্রত্যাগের ইচ্ছার সহিত মূত্রনালীতে
জ্বালা যন্ত্রনা ও কোঁথানি, প্রসাব করার সময় অসহ্য যন্ত্রনা ও বেদনা। প্রস্রাব ফোঁটা
ফোঁটা করিয়া বাহির হয়। প্রস্রাবের পূর্বে ও পরে জ্বালা ও বেদনা। লিঙ্গোচ্ছাস ও কামেচ্ছা।
প্রস্রাবের সঙ্গে সাদা সাদা টুকরার মত পদার্থ নির্গমন।
ক্লিমেটিকস :
প্রস্রাব একটু হইলে আবার বন্ধ হইয়া
যায়। অনেক্ষন বসিয়া থাকিয়া প্রস্রাব হয় না। পুরাতন প্রমেহ রোগে প্রস্রাবের সঙ্গে শ্লেম্মার
ন্যায় পদার্থ থাকে ।কিন্তু উহা পূঁজ নয়। প্রস্রাব কালে মূত্রনালীর গোড়া হইতে লিঙ্গমুন্ড
পর্যন্ত প্রদাহযুক্ত। মূত্রনালীতে ঝিনঝিন করে, মূত্রনালীর মুখে জ্বালা। প্রস্রাব ফোঁটা
ফোঁটা করিয়া বাহির হয়।
বৃদ্ধি : স্পর্শে, কেহ তাহার দিকে অগ্রসর হইলে, প্রস্রাবের সময়,
শীতল জল পানে, কফি খাইলে, সুরাপানে।
হ্রাস : মর্দনে, ঘর্ষনে, শয়নে, উত্তাপ প্রয়োগে।
অনুপুরক : ক্যাম্ফার, বেলেডোনা, সালফার, সিপিয়া, পালসেটিলা, মার্ক-সল।
তুলনীয় : পালসেটিলা, সিকেলি কর।
পরবর্তী ঔষধ : কেলি আয়োড়, সিপিয়া,
পালসেটিলা, ফসফরাস, বেলেডোনা।
ক্রিয়ানাশক : একোনাইট, পালসেটিলা, রিউম, এপিস, ক্যাম্ফার, লরোসি, কেলি,
নাইটি।
ক্রিয়া স্থিতিকাল : ৩০ থেকে ৪০ দিন।
ক্রম : Q, ৩x হইতে ২০০ শক্তি
ডাঃ মহি উদ্দিন
প্রভাষক :- ফেনী হোমিওপ্যাথিক
মেডিকেল কলেজ।
যোগাযোগ
:- ফরাজী হোমিও হল।
সদর হাসপাতাল, উত্তর বিরিঞ্চি রোড় - ফেনী
blog: htth://fhhfeni.blogspot.com
2 মন্তব্যসমূহ
খুব সুন্দর লিখেছেন।দু'য়েক যায়গায় প্রিনটিক মিসটেক আছে যেমন বেলেডোনা লিখতে কেলেডোনা হয়েছে এরুপ আরও দুএক যায়গায় হয়েছে- অনুগ্রহ করে সংশোধন করুন
উত্তরমুছুনকুমিল্লা পাঠানোর ব্যবস্থা আছে আমাকে জানাবেন আমি আমার জন্য বিদেশে আনব
উত্তরমুছুন